Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home পাহাড়ী নারীদের বিশ্বজয়: সৌরবিদ্যুতে ঘুচেছে পানির কষ্ট
    পজিটিভ বাংলাদেশ

    পাহাড়ী নারীদের বিশ্বজয়: সৌরবিদ্যুতে ঘুচেছে পানির কষ্ট

    পাহাড়ী নারীদের বিশ্বজয়: সৌরবিদ্যুতে ঘুচেছে পানির কষ্ট
    rskaligonjnewsDecember 21, 20229 Mins Read
    Advertisement

    জুমবাংলা ডেস্ক: পাহাড়ি দুর্গম পথ পেরিয়ে পানি সংগ্রহ করতেই দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হতো নারীদের। পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করতে হতো পাহাড়ের নিচ থেকে; অতিকষ্টে। কিন্তু পানি সংগ্রহের সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে স্থানীয় উদ্যোগে। এই উদ্যোগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীরা। বাংলাদেশে পাহাড়ি গ্রামের এই নারীরা নিজেরাই নিজেদের গল্প বদলে দিয়েছেন।

    বিশুদ্ধ পানী

    গল্পটা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ি উপজেলার নারীদের। এ বছর জলবায়ু অভিযোজনে অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) ‘লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে জুরাছড়ির নারীদের এই উদ্যোগ। চলতি বছর আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭-এ আনুষ্ঠানিকভাবে এ অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করা হয়।

    জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে পানির সংকট বহু বছর ধরে। বার্লিন-ভিত্তিক অলাভজনক পরিবেশ বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জার্মানওয়াচ-এ প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স (সিআরআই) ২০২১ অনুসারে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে সপ্তম। পাহাড়ে পানি সংকটের মতো আরো অনেক ধরনের জলবায়ু সংকট আছে দেশজুড়ে।

    জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের পানির উৎসগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সংকট আরো জটিল হচ্ছিল। পানি সংগ্রহ করতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করতে হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জুড়াছড়ি উপজেলার নারীদের কষ্টও একই রকম। এই উপজেলা জেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। জুরাছড়ির দুর্গম গ্রামগুলোতে তীব্র পানি সংকট ছিল যুগের পর যুগ। ২০১৭ সালে পাহাড় ধ্বসে এখানকার বনাঞ্চল ধ্বংস হয়। ফলে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অথচ পাহাড়ের অধিবাসীরা এই পানির উপরই নির্ভরশীল।

    ‘এখন জীবন অনেক সহজ’

    ‘মাত্র এক বছর আগেও এক কলসি পানি সংগ্রহ করতে আমাদের দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হতো। শুকনো মৌসুমে আমরা অতিকষ্টে খাওয়া ও রান্নার পানি সংগ্রহ করতে পেরেছি। কিন্তু গোসলের জন্য পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। তখন গোসল ছিল আমাদের জন্য বিলাসিতা। কিন্তু এখন সেই সংকট আর নাই।’ কথাগুলো বলছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জুড়াছড়ি উপজেলার বাদল পাড়ার বাসিন্দা বিশ্বরানী চাকমা (৩৫)। এখন বিশ্বরানী চাকমার ঘরের কাছেই পানির কল। ঘর থেকে বের হয়ে মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে পানি নিয়ে পুনরায় ঘরে ফিরলেন এই নারী।

    জমি দানকারী

    চৌমুহনী গ্রামের বাসিন্দা শেফালিকা চাকমা (৪০), ছোটবেলা থেকেই পানির কষ্ট দেখছেন। পরিবারের পানির প্রয়োজন তাকেই মেটাতে হেতো। দিনের অনেকটা সময় পানি সংগ্রহে ব্যয় করতেন এই নারী। কিন্তু এখন সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে। শেফালিকা চাকমা বলেন, ‘আমাদের পুর্বপুরুষেরা পানির কষ্ট করেছেন। আমরাও জীবনের অনেকটা সময় পানির কষ্ট করেছি। এখন পানির কষ্ট অনেকটা কেটে গেছে। খুব সহজে ঘরের কাছে পানি পাচ্ছি।’

    দীপায়ন চাকমা (৪১), জুরাছড়ির চৌমুহনী বাজারে দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু পানির অভাবে তার দোকান চালানো ছিল কষ্টকর। দোকান বন্ধ রেখে দীপায়নকে পানি সংগ্রহে যেতে হতো। কিন্তু এখন তার দোকানের সামনেই পানির কল। তিনি বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারছেন অতি সহজে এবং অল্প সময়ে। শুকনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাহাড়ের নিচে রিংওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করতো। রিংওয়েলের ওই পানি বিশুদ্ধ ছিল না। কিন্তু এখন স্কুলের শিক্ষার্থীরা গ্রামের ক্লাইমেট রেসিলিয়ান্স কমিটি (সিআরসি)-এর মাধ্যমে বিশুদ্ধ পাচ্ছে।

    বাদল পাড়ার পানির কলে সকালে ও বিকালে অনেক নারীর ভিড় থাকে। তারা সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করেন এই কল থেকে। এই নারীরা মাত্র এক বছর আগেও অনেক কষ্টে পানি সংগ্রহ করেছেন পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে। এখন বাদল পাড়া গ্রামে নিরঞ্জন চাকমার জমিতে বসানো হয়েছে পানির কল। পানির কল, সৌরবিদ্যুতের প্যানেল এবং পানি সংরক্ষণের ট্যাংক বসানের জন্য দশ শতাংশ জমি স্বেচ্ছায় দান করেছেন তিনি। নিরঞ্জন চাকমার স্ত্রী যুগেশ্বরী চাকমা (৭০) বলেন, ‘কমিউনিটির সুবিধার জন্য আমরা স্বেচ্ছায় জমি দান করেছি। এতে গোটা কমিউনিটি উপকৃত হচ্ছে এবং আমরাও উপকৃত হচ্ছি। আমাদের সকলের পানি সংকট সমাধান হয়েছে।’

    বাদল পাড়া গ্রামের এই পয়েন্টে সৌর বিদুতের মাধ্যমে ৪শ’ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়ে ভূগর্ভস্থ মিঠা পানি উঠানো হচ্ছে। সেই পানি সংরক্ষণ করা হচ্ছে ৫ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পানির ট্যাংকে। এই ট্যাংক থেকে পানি সরবরাহ হচ্ছে অন্যান্য গ্রামের পানির ট্যাপগুলোতে। সেখান থেকে প্রত্যেক পরিবার প্রয়োজন অনুযায়ী বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারছে। যেসব গ্রামে এখনো পানি সরবরাহ করা যায়নি, সেসব গ্রামের নারীরা বাদল পাড়া থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারেন। পানি সরবরাহে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিদ্যুত বিহীন গ্রামে পানি সংকটের সমাধান হয়েছে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে।

    জুরাছড়ি উপজেলার দুলকূল পাঁচপতিমা গ্রামের ক্লাইমেট রেসিলিয়ান্স কমিটি (সিআরসি)-এর সভাপতি সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা একত্রিত হয়ে পানি সংকটকে গ্রামের প্রধান সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেছি। এরপরে আমরা সংকট সমাধানের জন্য কাজ শুরু করি। গ্রামের মানুষের এখন আর পানির সংকট নাই।’

    ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারী নেতৃত্বের সাফল্য

    পানি সংকট যখন গ্রামবাসীদের এক নম্বর সমস্যা, ঠিক তখন জলবায়ু সহিষ্ণুতা প্রকল্প নিয়ে জুরাছড়ি গিয়েছিল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। গত বছর জুরাছড়ির গ্রামগুলোতে কাজ নিয়ে গিয়েছিল পরিষদ। নিজেদের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে প্রকল্প গ্রহনের সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল গ্রামবাসীকে। তখন এসব গ্রামের নারীরা একতাবদ্ধ হয়েছিলেন। পানি সংকটকে তারা এক নম্বর সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেন। গ্রামের পুরুষেরাও একমত হন নারীদের এই সিদ্ধান্তে।

    পাহাড়ী নারী

    দায়িত্ব পেয়ে জলবায়ু সংকট উত্তরণে বৈঠকে বসেন জুরাছড়ির পাঁচ গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। ওই বৈঠকে তারা গ্রামে ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটি (সিআরসি) গঠন করে। কমিটিতে সকল গ্রামের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়। কমিটিতে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি গ্রামের একজন প্রবীণ ব্যক্তি; তবে সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয় নারীদের।

    পুরো কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন নারীরা। ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটির সাধারণ সম্পাদক একজন নারী। সাধারণ সম্পাদক মহিলা সদস্যদের দিয়ে কমিটির মূল কাজ করেন। পুরুষ সদস্যরা নারীদের কাজে সাহায্য করেন। সাধারণ সম্পাদক মাসে একবার ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটির সভা আহ্বান করেন। বৈঠকে পানি সরবরাহের সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। বৈঠকে পরবর্তীমাসের নতুন পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়।

    কেন মহিলারা প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন? এ প্রশ্নের জবাবে গ্রামবাসীরা বলেন, ‘মহিলারা সবচেয়ে বেশি পানির সমস্যায় পড়েন। এক সময় তাদের দিনের বেশির ভাগ সময় কাটত পানি সংগ্রহে। শিশুদের দেখাশোনা, রান্নাবান্না এবং অন্যান্য গৃহস্থালির কাজে অনেক সমস্যা ছিল। পানির সংকট কাটিয়ে ওঠার দায়িত্ব তাদেরই বর্তায়। তাহলে একটা ভালো সমাধান পাওয়া যাবে। তাই এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। নারীরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।’

    সদস্যরা জানান, ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটির প্রথম বৈঠকে এলাকার মানুষের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা তাদের বিষয়গুলিকে গুরুত্বের ক্রমানুসারে স্থান দেন। পানীয় জলের অভাবকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দ্বিতীয় সমস্যা হিসাবে কৃষি জমির সেচ সমস্যাকে রেকর্ড করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে, বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব গ্রামের সবচেয়ে বড় সমস্যা। সবার আগে কমিটিকে পানি সংকট সমাধান করতে হবে। এরপর পানি সংকট কাটাতে প্রকল্পটি গ্রহণ করে কমিটি। কমিটি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাথে বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো সমন্বয় করে।

    ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটি (সিআরসি)’র সাধারণ সম্পাদক ঝরনা চাকমা বলেন, ‘আমরা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স কমিটির মাধ্যমে পাঁচ গ্রামবাসীর সম্মিলিত ঐক্যের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করি। এখানে নারীদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিকে পানির লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সহজে পানি পেয়ে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে।’

    ইউএনডিপি-বাংলাদেশ-এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা বলেন, ‘স্থানীয় নেতৃত্বের চমৎকার সমন্বয় ছিল এই প্রকল্পে। সিদ্ধান্ত গ্রহনে নারীদের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই কমিটিগুলো গঠিত হলেও এর নেতৃত্বে ছিলেন নারীরা। এটাই প্রকল্পের অভিনবত্ব। এই প্রকল্পের সাফল্য থেকে আমরা আরো অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারবো।’

    স্বল্প খরচে পানি উত্তোলন

    প্রকল্প গ্রহণের মূল বিবেচ্য ছিল স্বল্প খরচে পানি উত্তোলন করা। বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না, তাই সৌরবিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে নলকূপ বসানো হয়। নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ জলবায়ু সহনশীলতা কমিটি কর্তৃক গৃহীত প্রকল্পগুলিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। কিন্তু সম্প্রদায়ও এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে।

    সিআরসি

    পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য সোলার প্যানেল, জলের ট্যাঙ্ক, জলের ট্যাপ স্থাপনের জন্য স্থানীয় সম্প্রদায় ১০ শতাংশ জমি দিয়েছে। এ জমির মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। প্রকল্পটি স্থাপনের জন্য শ্রমের কাজ গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে করেছিলেন। স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পানির পাইপ সংযোগের কাজ চলছে। পানির ট্যাঙ্ক, পানির ট্যাপ, সোলার প্যানেল, পানির লাইন ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণ জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কমিটির দায়িত্ব। জল সরবরাহ প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি মহিলা তহবিল গঠন করা হয়েছে। সুবিধাভোগী পরিবার প্রতি মাসে ৩০ টাকা করে এই তহবিলে জমা করে। এই টাকা দিয়ে নারীরা প্রয়োজন মতো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন।

    প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে আলাদা আলাদা ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট কমিটি (সিআরসি) গঠন করা হয়। এই কমিটি পানি সংকট সমাধানে কাজ করে। কিন্তু পানির উৎস্য সংরক্ষণের জন্য গঠিত হয় আরেকটি কমিটি। বনযোগীছড়া ইউনিয়নে গঠিত হয়েছে বনযোগীছড়া ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) ম্যানেজমেন্ট কমিটি। এই কমিটির আওতাভূক্ত আছে ইউনিয়নের ১২১ দশমিক ২৬ একর এলাকা। পাহাড়ের বন সংরক্ষণ এবং পাহাড়ের জলের প্রবাহ ঠিক রেখে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ করা এই কমিটির কাজ। ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট কমিটি (সিআরসি)’র সহায়ক হিসাবে কাজ করে ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) ম্যানেজমেন্ট কমিটি । ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) ম্যানেজমেন্ট কমিটি পানির উৎস্যগুলোকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট কমিটি (সিআরসি) সেই উৎস্য থেকে পানি সংগ্রহ করে তা সরবরাহের উদ্যোগ নেয়। এভাবে সমন্বিতভাবে স্থানীয় নেতৃত্বে গোটা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

    প্রকল্প বাস্তবায়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সঙ্গে কাজ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ইউএসএআইডি এবং ডেনমার্ক উন্নয়ন করপোরেশন (ডানিডা)।

    যেখানে জলবায়ু সংকট দৃশ্যমান

    বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত দুর্গম উপজেলা। এ উপজেলার গ্রামগুলোতে বেশ কয়েক বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দৃশ্যমান। এই উপজেলার বাদল পাড়া গ্রামের বয়সী বাসিন্দারা বলেন, পাহাড়ের প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিল জুরাছড়ি উপজেলার ছয়টি গ্রামের মানুষেরা। গ্রামগুলো হচ্ছে: শুকনাছড়ি, চেয়ারম্যান পাড়া, হেডম্যান পাড়া, হাইল্যারাম পাড়া, দেবাছড়ি এবং কতরখাইয়া পাড়া।

    গ্রামবাসীরা জানান, এখানকার বনের গাছপালা মরে যাচ্ছিল পানির অভাবে। পাহাড়ি পানির প্রবাহগুলো ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছিল। ফলে গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের পানির অভাবও তীব্র হতে থাকে। ২০১৭ সালে পাহাড় ধ্বসের পরে গ্রামগুলোতে পানি সংকট আরো বেড়ে যায়। পানি সংকটের কারণে গ্রামগুলো থেকে মানুষেরা স্থানান্তর শুরু করে। তারা পানির সুবিধা আছে, এমন স্থানে গিয়ে বসবাস শুরু করে। শুকনা ছড়ি গ্রামের চিরঞ্জীব চাকমা, মানবেন্দ্র চাকমা, ধনবান কারবারী, সুভাষ চাকমা, জ্ঞানেন্দ্র লাল চাকমা, সরত কুমার চাকমা সহ আরো আরো অনেক পরিবার পানি সংকটের কারণে স্থানান্তরিত হয়েছে। বিলাইছড়ির তিকুনিয়া ত্রিপুরা পাড়ার ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৮টি পরিবার পানির সংকটের কারণে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছে। পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে এলাকার মানুষকে সেই সংকট থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে গ্রামবাসী মনে করেন।

    বিশ্ব স্বীকৃতি

    বাংলাদেশের রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ির প্রত্যন্ত পাঁচ গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের সাফল্য বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন করেছে। জলবায়ু অভিযোজনে অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) ‘লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে জুরাছড়ির নারীদের এ উদ্যোগ। বিশ্বের ১৭০টি দেশের অনেক প্রকল্পের মধ্যে থেকে ৪টি দেশের ৪টি প্রকল্পকে এবছর বেছে নিয়েছে জিসিএ। এর মধ্যে রাঙামাটি জেলা পরিষদ বাস্তবায়িত এ পানি প্রকল্পটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নেতৃত্ব’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। পানির জন্য নারীদের সংগ্রাম ও কাজের অভিনবত্ব বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার নারীদের এ সম্মান দিয়েছে।

    অ্যাওয়ার্ড

    মিশরের শার্ম আল-শেখে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৭-এ এই অ্যাওয়ার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহন করেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহন এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা এই প্রকল্পটি সফলতা এনে দিয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত থাকা এই প্রকল্পের সফলতার আরেকটি কারণ। এই সাফল্য আমাদের আরো অনেক সমস্যা সমাধানের পথ দেখাবে।’

    অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো- ভারতের পুনের বেসরকারি সংগঠন স্বয়াম শিক্ষণ প্রয়োগ, নেপালের বেসরকারি সংগঠন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফোরাম, নেপাল (সিডিএএফএন) এবং কেনিয়ার সংগঠন অ্যাডাপটেশন কনসোর্টিয়াম।

    ভেড়ামারায় বিষমুক্ত সবজি চাষে ১শ কৃষকদের চমক

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    কষ্ট ঘুচেছে নারীদের পজিটিভ পানির পাহাড়ী বাংলাদেশ বিশ্বজয়: সৌরবিদ্যুতে
    Related Posts

    দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌবাহিনীর ১৯৯ জন সদস্য

    August 28, 2025
    আন্তর্জাতিক গণিত

    আন্তর্জাতিক গণিত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তাহসিনের চমক

    July 29, 2025

    ‘সত্যের সঙ্গে’ নতুন অভিযাত্রা শুরু করলো দৈনিক খবর সংযোগ

    July 28, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Jahaj

    ৭০ হাত মাটির নিচে মিলল ৩৩ বছর আগে ডুবে যাওয়া জাহাজ

    aryna sabalenka vs amanda anisimova prediction

    Aryna Sabalenka vs Amanda Anisimova Prediction: US Open 2025 Final Odds, Picks, Start Time & Betting Preview

    পল্লী বিদ্যুৎ

    অনির্দিষ্টকালের গণছুটি ঘোষণা পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের

    Bra

    দিনে কতক্ষণ ব্রা পরে থাকবেন? মেয়েদের জন্য জানা জরুরি

    ঐশ্বরিয়া

    এক রাত খুশি করে দিব বিনিময়ে ১০ কোটি দিয়েন : ঐশ্বরিয়া

    Iphone

    দুবাই ভ্রমণে গিয়ে আইফোন হারালেন ইউটিউবার, বিনামূল্যে বাড়িতে পৌঁছে দিল পুলিশ!

    david johnson cause of death

    David Johnson Cause of Death: Legendary MLB Manager Passes Away at 82

    Girls

    পুরুষদের যেসব কথাগুলোতে মেয়েরা দুর্বল হয়ে যায়

    Google Pixel 9a নাকি iphone 16e

    Google Pixel 9a নাকি iphone 16e, কোনটি সেরা স্মার্টফোন?

    Sarjis

    রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের আইডিয়া ভারতের দেওয়া : সারজিস

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.