নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে পুকুরে গোসল করতে নেমে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি গ্রামের ঠান্ডারচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. মাজহারুল ইসলাম (২৫) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মো. হাসেন আলীর ছেলে। তিনি একজন নির্মাণ শ্রমিক।
মাজহারুল ইসলামের সহকর্মী মামুন বলেন, ‘আমরা পাঁচজন শ্রমিক বাঁশবাড়ি গ্রামের ৩০০ মিটার ইট সলিং রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাজহারুল ও আমি খুবই গরম অনুভব করলে রাস্তার পাশের খননকৃত একটি নতুন পুকুর পাড়ে যায়। এরপর মাজহারুল আগে পুকুরে নামে। এ সময় সে ডুবে যায়। এরপর আমিও পানিতে নেমে তাকে খোঁজ করতে থাকি। কিন্তু তাকে খোঁজে পাইনি। এরপর আমি দৌড়ে এসে আমাদের অন্য লোকজন ও স্থানীয়দের ডেকে বিষয়টি জানায়।’
রাস্তা নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার আব্দুল হক বলেন, বাঁশবাড়ি গ্রামে ৩০০ মিটার ইট সলিং রাস্তা নির্মাণের জন্য পাঁচজন শ্রমিক কাজ করছে। দুজন শ্রমিকের গরম অনুভব হলে পাশের পুকুরে গোসল করতে যায়। গোসল করতে নেমে একজন শ্রমিক নিখোঁজ হয়। এরপর স্থানীয়রা পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের বাবা হাসেন আলী বলেন, ‘দৈনিক ৫০০ টাকায় ছেলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করত। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে কাজে বের হয়ে সন্ধ্যায় আবার কোনো দিন রাতে বাড়ি ফিরত। দুপুরের দিকে ঠিকাদার ফোন করে জানালেন দ্রুত বাঁশবাড়ি আসেন। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসি। এসে জানতে পারলাম আমার ছেলে পুকুরে ডুবে নিখোঁজ। কতক্ষণ পর লাশ তুলে আনল।’
হাসেন আলী আরও বলেন, ‘ছেলের রোজগারের টাকায় চলত আমার সংসার। আমার ছেলের সালমান নামে আট মাস বয়সী একটি শিশুপুত্র আছে। এখন কে দেখবে তাঁর শিশুপুত্র স্ত্রী আর আমাদের।’
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাস্তায় কাজ করার সময় দুই শ্রমিক পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় একজন শ্রমিক নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় মরদেহ উদ্ধার করেছে।
তিনি আরও জানান, পুকুরটি স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল ইসলামের, পুকুরটি কমপক্ষে ২০ ফুট গভীর। ঘটনার পরপরই শ্রীপুর থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই স্থানীয় পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিন্টু মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।