আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য সামনের সপ্তাহে মস্কো যাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
ক্রেমলিন বলছে, দুই নেতা এই সাক্ষাতের সময় একটি ‘সার্বিক অংশীদারিত্ব এবং কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে কথা বলবেন। খবর বিবিসি’র।
চীন এখন রাশিয়ার বড় মিত্র। বেইজিং এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের এই প্রস্তাবের পর এখন শি জিনপিং মস্কো সফরে যাচ্ছেন। তবে চীনের এই মধ্যস্থতার প্রস্তাবে পশ্চিমা দেশগুলোর দিক থেকে সেরকম সাড়া পাওয়া যায়নি।
বরং পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার কাছে অস্ত্র সরবরাহ না করতে চীনকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০ হতে ২২ মার্চ পর্যন্ত মস্কো সফর করবেন। পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হুয়া চুনিইং বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে চীন একটি ‘নিরপেক্ষ এবং ন্যায্য’ অবস্থান নেবে এবং শান্তির লক্ষ্যে আলোচনার জন্য গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।
চীনের প্রস্তাবে শান্তি আলোচনা এবং পরস্পরের জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা আছে। তবে এই ১২ দফা প্রস্তাবে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের কোন সুনির্দিষ্ট কথা উল্লেখ নেই।
ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে দেখা করতে চান- “আমি সত্যি একথা বিশ্বাস করতে চাই যে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না”, বলেছিলেন তিনি।
কিছু মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, চীনা নেতার মস্কো সফরের পর প্রেসিডেন্ট শি এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি টেলিফোনে কথা বলবেন। তবে এটি এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
ইউক্রেনের বিশ্বাস, প্রেসিডেন্ট শি মস্কোতে এই সফরে যাওয়ার মাধ্যমে বাকী বিশ্বকে এরকম একটা বার্তা দিতে চাইছেন যে রাশিয়ার কিছু মিত্র অন্তত আছে।
প্রেসিডেন্ট শি’র মস্কো সফরের কথা ঘোষণার ঠিক আগে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেন, “আমার মনে হয় না চীন আসলে এখনো সেরকম একটা মূহুর্তে পৌঁছেছে, যখন তারা রাশিয়াকে অস্ত্র দিতে চায়, অস্ত্র দিতে প্রস্তুত। আবার আমার এটাও মনে হয় না যে এই সফরের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবে… মস্কোতে চীনা নেতার এই সফরই আসলে একটা বার্তা। তবে আমি মনে করি না যে এর কোন তাৎক্ষণিক ফল হবে।”
কুলেবা বলেন, “এই সফরের মাধ্যমে হয়তো এরকম একটা বার্তা দেয়া হচ্ছে যে চীন এবং রাশিয়া খুব ঘনিষ্ঠ। এতটাই ঘনিষ্ঠ যে চীনা নেতা রুশ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন, যিনি কিনা খুব ভালো অবস্থানে নেই।”
‘আর আমার মনে হয় এটা পুরো বিশ্বের জন্য,পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য, এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে অপশ্চিমা দেশগুলোর কাছেও এরকম একটা বার্তা পাঠানোর চেষ্টা যে- রাশিয়া একা নয়, চীন তাদের সঙ্গে কথা বলছে।’
যুক্তরাষ্ট্র চায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকুক। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেছেন, “তারা দুজন যদি কথা বলেন সেটা তো বেশ ভালো।”
এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় কিয়েভ এবং মস্কোর মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানান।
তবে কুলেবা বলেন, তারা এই টেলিফোন কলে ‘ভৌগলিক অখণ্ডতার নীতির গুরুত্ব’ নিয়ে কথা বলেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।