জুমবাংলা ডেস্ক: লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস গ্রাম। দিগন্ত বিস্তৃত সারি সারি ফসলের মাঠ। এখানেই ১৩৭৭ বছর আগে নির্মিত এক মসজিদের খোঁজ মিলেছে! যেটিকে এখন এশিয়ার প্রথম মসজিদও বলা হচ্ছে।
১৯৮৭ সালের কথা কথা। ভয়ংকর জঙ্গলে ঘেরা এক উঁচু স্থান পরিষ্কার করতে নেমেছিল গ্রামবাসী। আশপাশের জায়গার তুলনায় ৮-১০ ফুট উঁচু সেই স্থানটি। দিনের বেলায়ও সেখানে ছিল ঘোর অন্ধকার। জঙ্গলটি পরিষ্কার করার সময় কিছু প্রাচীনকালের ইট বেরিয়ে আসে। মাটি ও ইট সরাতে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় মসজিদের ভিত।
কথা হলো, এরকম পোড়া মাটির স্থাপত্যতো বাংলাদেশে এর আগেও অনেক পাওয়া গেছে। তাহলে এটার বিশেষত্বটা কোথায়? রহস্যটা হলো, এই মসজিদ কে বা কারা নির্মাণ করলো সেটা নিয়ে। সেইসব পোড়া মাটির ফলক কার্বন ডেট করে প্রত্নতাত্ত্বিকবিদরা নিশ্চিত হয়েছে, এর নির্মাণকাল আনুমানিক ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি বা ৬৯ হিজরিতে। এর মানে এটি এক হাজার ৩৭৭ বছর আগের মসজিদ!
মসজিদের ধ্বংসস্তূপে যে শিলালিপি পাওয়া যায় তাতে সুস্পষ্টভাবে আরবিতে লেখা আছে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ, হিজরি ৬৯ সাল।’ শিলালিপির সূত্রে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৬৯ হিজরিতে নির্মিত হয়েছে এ মসজিদটি। খননের পর মসজিদের মেহরাব এবং মসজিদসংলগ্ন ঈদগাহ মাঠ ও খুতবার মিম্বরও আবিষ্কৃত হয়। এলাকার লোকজন এ মসজিদটির নাম দিয়েছেন ‘হারানো মসজিদ’।
ঐতিহাসিকরা ধারণা করেন, সাহাবি হজরত আবু ওয়াক্কাস (রা.) এ অঞ্চল দিয়েই চীনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বর্তমানে চীনের বিস্মৃত কোয়াংটা নদীর ধারে কোয়াংটা শহরে তার নির্মিত মসজিদ ও সমাধি রয়েছে। ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক টিম স্টিল দাবি করেন, খ্রিষ্টপূর্ব সময় থেকে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পাড় ধরে সিকিম হয়ে চীনের মধ্য দিয়ে আরব ও রোমান বণিকদের বাণিজ্য বহরের যাতায়াতের অনেক প্রমাণ রয়েছে তার কাছে। এ হারানো মসজিদ হতে পারে সাহাবি আবু ওয়াক্কাস (রা.) নির্মাণ করেছেন।
তবে ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দের এই মসজিদ নির্মাণ অবাক হওয়ার কিছু নয় কারণ বাংলায় সভ্যতার বিকাশ সেই খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ বছর আগে যা কি-না প্রাচীন রোমান, গ্রিক, পারস্যের সঙ্গে তুলনাযোগ্য। এই মসজিদের নির্মাণের সময় বাংলায় খড়্গ বংশের শাসন চলছিল; যারা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।