আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ও বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে হুমকি দেয়ার অভিযোগে এই তদন্ত শুরু হয়েছে।
শনিবার (২০ আগস্ট) একটি রাজনৈতিক সমাবেশে ইমরান খানের দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে হাজার হাজার সমর্থক অবস্থান নিয়েছে। ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচকে পরিণত হয়েছে ইমরান খান।
শনিবারের সভায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপরেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ওই সহযোগীকে আটক করা হয়েছিল। তাকে আটক করার কারণে শনিবার একটি জনসভায় ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান এবং একজন নারী বিচারকের নিন্দা করেন ইমরান খান।
তিনি অভিযোগ করেন, তার দলের সহকর্মীদের ওপর অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে।
‘তোমরাও প্রস্তুত থেকো, আমরাও তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো,’ ওই দুজন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় বলেছেন ইমরান খান।
পুলিশের তদন্তকারীরা বলছেন, রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ইমরান খান সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইন ভঙ্গ করেছেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত শুরুর খবর জানার পর হাজার হাজার সমর্থক তার ইসলামাবাদের বাড়ির সামনে জড়ো হন। তারা ঘোষণা দেন, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা পুরো রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। তবে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে নয়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সেখানে রয়েছেন।
পুলিশের তদন্ত করার ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন পাকিস্তানের সরকার ও ইমরান খানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে।
গত এপ্রিল মাসে একটি অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিদায় নিতে হয় ইমরান খানকে। এরপর থেকেই তিনি নতুন নির্বাচনের দাবি আসছেন। বিভিন্ন বক্তব্যে পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচনাও করেছেন।
শনিবার পাকিস্তানের গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে, ইমরান খানের বক্তব্য সরাসরি প্রচার করতে পারবে না দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো, কারণ সেখানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থাকে। তবে ইমরান খান দাবি করেছেন, সরকার তার ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করতে চাইছে। রবিবার রাওয়ালপিন্ডিতে আরেকটি সমাবেশে ইমরান খান ওই ঘোষণার নিন্দা করেছেন।
গত মাসেই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের উপ-নির্বাচনে পিএমএল-এনকে হারিয়ে বড় বিজয় পেয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই।
অনেকে মনে করেন, ওই নির্বাচনের ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভোটারদের মধ্যে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে। তার দাবি অনুযায়ী আগাম নির্বাচন দেয়া হলে সেখানে ফলাফল কি হতে পারে, সে বিষয়েও একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
দুই হাজার আঠার সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। কিন্তু সে দেশের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তিনি মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।