জুমবাংলা ডেস্ক : পূর্বাচল নতুন শহর নামে নতুন একটি সিটি করপোরেশন গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য বিবেচনায় রেখেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর উন্নয়নমূলক কাজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঢাকা উত্তর বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী এই নতুন সিটি গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। আজ মঙ্গলবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাজউক এসব তথ্য জানিয়েছে। নতুন সিটি করপোরেশন হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে পূর্বাচলের রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি রাজউকের সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে নিজস্ব জনবলে বাস্তবায়ন করতে চায় তারা। এই প্রস্তাবটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য রাজউক বোর্ডে বিবেচনাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এবং ফরিদা খানম অংশ নেন।
রাজধানীতে জনসংখ্যার চাপ কমাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জে ছয় হাজার ১৫০ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠছে পূর্বাচল নতুন শহর। এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। পরে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে রাজউকের নিজস্ব অর্থায়নে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা গেছে, কমিটির পক্ষ থেকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নাগরিকদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে আলাদা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা স্বতন্ত্র বডি তৈরি করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। আজকের বৈঠকে রাজউক এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, টিআই (শহর উন্নয়ন) আইন অনুযায়ী, রাজউক নির্মিত যে কোনো অবকাঠামো সিটি করপোরেশনের বরাবর হস্তান্তরের বিধান রয়েছে। কিন্তু পূর্বাচল প্রকল্প এলাকাটি সিটি করপোরেশনের আওতাধীন না হওয়ায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তা হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে প্রকল্পটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ বা পৌরসভা গঠন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজউক। তারা গত বছরের ডিসেম্বরে এই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় গত ফেব্রুয়ারিতে স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ গঠনের যৌক্তিকতাসহ আবার প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। এখন রাজউক আলাদা একটি সিটি করপোরেশন গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৈঠকে তিনি জানান, কাগজে-কলমে চট্টগ্রাম সিটিতে ৫৬টি খাল আছে। কিন্তু বাস্তবে আছে ৩৬টি। চাকতাই ও চশমা খালসহ অন্য খালগুলোতে দখল ও আবর্জনার কারণে জলাবদ্ধতা হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এগুলো নিয়ে কাজ করছে। তারপর তারা এগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেবে। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেক অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও সুফল আসছে না। খালগুলো খনন করার পর এগুলো নিয়মিত দেখভাল করতে হবে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত সুরক্ষায় হোটেলগুলোর বর্জ্য ও হ্যাচারিগুলোর দূষিত পানি পরিশোধনের জন্য স্থায়ী ইটিপি করার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।