জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পূর্ব রাজাবাজার এলাকা মঙ্গলবার (৯ জুন) দিনগত মধ্যরাত ১২টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হবে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে ওই এলাকার ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে লকডাউন করার আগে ওই এলাকায় কীভাবে সেটি কার্যকর করা হবে এবং মানুষের জীবনধারণ কীভাবে হবে, তা নিয়ে অনলাইনে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। লকডাউন করার পাশাপাশি এটি কীভাবে কার্যকর করা হবে সে বিষয়ে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ডিএনসিসি থেকে জানানো হয়েছে।
ডিএনসিসি জানায়, পূর্ব রাজাবাজার এলাকার নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), এটুআই, ই-কমার্স অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় একটি মাত্র প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ (গ্রিন রোডে আইবিএ হোস্টেলের পাশে) খোলা থাকবে। লকডাউন চলাকালে ওই এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এছাড়া জনগণের চলাচল অত্যন্ত সীমিত রাখা হবে। লকডাউন চলাকালে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় বসবাসরত লোকজন বাইরে যেতে পারবেন না এবং বাইরের লোকজন ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে, যা বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। এটুআই ও ইক্যাব যৌথভাবে এটি পরিচালনা করবে। হোম ডেলিভারির জন্য ইতিমধ্যে একদল প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী তৈরি করা হয়েছে। যাদের অনলাইন সুবিধা নেই, নগদ অর্থে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে চান তাদের জন্য দু’একটি শাকসবজি, মাছ-মাংসের ভ্যান, ভ্যানচালক ও পণ্যসামগ্রী সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে।
ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান পূর্ব রাজাবাজার এলাকার কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ মানুষের একটি তালিকা প্রণয়ন করছেন। তালিকা অনুযায়ী তাদেরকে ডিএনসিসি থেকে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। এই এলাকার অসুস্থ রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করা হবে।
পূর্ব রাজাবাজার এলাকার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে লকডাউনের বিষয়ে আজ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এ এলাকায় অবস্থিত নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য বুথ স্থাপন করা হবে। এটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বুথটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক।
লকডাউন যথাযথভাবে পালিত হওয়ার লক্ষ্যে ওই এলাকায় পুলিশের টহল থাকবে। এছাড়া মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হবে। গুরুতর রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে। জরুরি সেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা লকডাউন এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন। ডিএনসিসির বিশেষ পরিচ্ছন্নতা টিম সেখানে কাজ করবে। তবে ব্যবহৃত সুরক্ষা সামগ্রী বা মেডিক্যাল বর্জ্য যেমন- মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি আলাদাভাবে প্যাকেট করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে দিতে হবে। মেডিক্যাল বর্জ্য কোনোভাবেই অন্যান্য বর্জ্যের সঙ্গে মেশানো যাবে না।
অনলাইন সভায় অন্যদের মধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা, এটুআই এর প্রতিনিধি রেজাউল জামি, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন পরিচালক ডা. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার, শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।