জ্যোতির্বিদ কার্ল সাগান একে বলেছিলেন ‘পেল ব্লু ডট’। কারণ মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখায় ম্লান নীল একটি বিন্দুর মতো। এই গ্রহটিই আমাদের বাসস্থল। মহাবিশ্বের একমাত্র গ্রহ, যা জীবনধারণের উপযোগী।
সৌরজগতের বাইরে থেকে দেখলে পৃথিবীকে বিশেষ কিছু মনে হবে না। তবে প্রাণের উপস্থিতি, তরল পানি, বায়ুমণ্ডল, প্রাণ রক্ষাকারী চুম্বকক্ষেত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এ গ্রহের।
এ গ্রহের অবস্থান সূর্যের গোল্ডিলকস অঞ্চলে। এর চেয়ে দূরে থাকলে সব পানি জমে বরফ হয়ে যেত, আর কাছে থাকলে বাষ্প হয়ে যেত। অথচ প্রাণের টিকে থাকার জন্য তরল পানি আবশ্যক। আর পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ পানিতে পূর্ণ।
এই পানি কোত্থেকে এল? সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে থাকা হাইড্রোজেনের ভূমিকা রয়েছে এর পেছনে। তবে গ্রহাণুবেষ্টনী থেকে আসা গ্রহাণুও যে পৃথিবীতে পানি বয়ে এনেছে, তারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনটি বড় ভূমিকা রেখেছে, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।
আমরা থাকি পৃথিবীর বাইরের পৃষ্ঠে। চারপাশে ঘিরে রয়েছে বায়ুমণ্ডল, মানে বাতাস। এর বেশির ভাগটা নাইট্রোজেন—প্রায় ৭৮ শতাংশ। প্রায় ২১ শতাংশ অক্সিজেন আর বাকিটায় রয়েছে কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি। নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শ্বাসপ্রশ্বাসে সহায়তার পাশাপাশি বায়ুমণ্ডল আমাদের সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি, মহাজাগতিক রশ্মি, ছোটখাটো গ্রহাণু বা উল্কাসহ নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে।
পৃথিবীর ভেতরটা তাহলে কেমন? একদম ওপরের ৫-৭০ কিলোমিটার হলো ভূত্বক। এর নিচের ২ হাজার ৮৯০ কিলোমিটার ম্যান্টল। এই ম্যান্টলের ওপরের অংশ ও ভূত্বককে একসঙ্গে বলে লিথোস্ফিয়ার। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্ত, শীতল ও পাথুরে অঞ্চল। এর জন্যই পৃথিবীকে পাথুরে গ্রহ বা টেরেস্ট্রিয়াল প্ল্যানেট বলা হয়।
এর নিচে পৃথিবীর কেন্দ্র—তরল লোহা ও নিকেলে গঠিত বহিঃকেন্দ্র (৫ হাজার ১০০ কিলোমিটার) এবং কঠিন অন্তঃকেন্দ্র (৬ হাজার ৩৭৮ কিলোমিটার)। তবে পৃথিবীকে পাথুরে গ্রহ বলা হয় মূলত শক্ত, পাথুরে ভূত্বকের জন্য। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। চাঁদ ও পৃথিবী টাইডাল লক বা মহাকর্ষীয় আবদ্ধতায় আটকে রয়েছে। অর্থাৎ সূর্যের চারপাশে একসঙ্গে ঘোরে পৃথিবী ও চাঁদ একটি সিস্টেম হিসেবে। তাই পৃথিবী থেকে শুধু চাঁদের এক পাশ দেখা যা।।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।