বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে ছুটে গিয়ে পৃথিবী থেকে ৬৮ লাখ মাইল দূরের এক গ্রহাণু পিণ্ডকে সফলভাবে আঘাত করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি ‘ডার্ট মহাকাশযান’।
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা কোনো গ্রহাণু হুমকি তৈরি করলে সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য কীভাবে ধাক্কা মেরে এর গতিপথ বদলে দেওয়া যায়, এটি ছিল সেই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রথম পরীক্ষা।
এ পরীক্ষা চালানো হয় মোটামুটি ১৬০ মিটার চওড়া একটি গ্রহাণুর ওপর, যার নাম দেওয়া হয়েছে ডাইমরফোস। খবর আরাদোলু ও রয়টার্সের।
দশ মাস আগে পৃথিবী থেকে রওনা দেওয়া নাসার ‘ডার্ট মহাকাশযান’ সোমবার সফলভাবে ওই গ্রহাণুর গায়ে আছড়ে পড়ে এবং ধ্বংস হয়ে যায়।
মোটামুটি একটি ফুটবল স্টেডিয়াম আকারের ওই গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষের আগমুহূর্ত পর্যন্ত ডার্টের গায়ে বসানো ক্যামেরা প্রতি সেকেন্ডে একটি করে ছবি পাঠাতে থাকে পৃথিবীতে। পুরো দৃশ্য ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে নাসার মিশন অপারেশন সেন্টার থেকে ওয়েবকাস্ট করা হয়।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার মাইল বেগে ডার্টের ওই আঘাতে ডাইমরফোসের গতি খুব সামান্য হলেও কমবে, সেটি হতে পারে প্রতি সেকেন্ডে এক মিলিমিটারের ভগ্নাংশ পরিমাণ। তাতেও এর কক্ষপথে সূক্ষ্ম পরিবর্তন আসবে, যা দীর্ঘমেয়াদে এর গতিপথ পাল্টে দেবে।
পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণুর গতিপথ বদলে দেওয়ার এ কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে কাইনেটিক ইমপ্যাক্টর টেকনিক।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডাইমরফোসের ক্ষেত্রে গতিপথের পরিবর্তন কতটা হলো, তা মাপতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। তবে ডার্ট মহাকাশযান পাঠিয়ে গ্রহাণুকে আঘাত করার অংশটুকু তারা সফলভাবেই শেষ করেছেন।
নাসার ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাম মেলোরি বলেন, নাসা কাজ করে মানবজাতির মঙ্গলের জন্য।… কে বলতে পারে, হয়তো এ প্রযুক্তিই একদিন আমাদের এই গ্রহকে রক্ষা করতে পারবে।
মহাকাশে ঘুরে বেড়ানো ছোট-বড় গ্রহাণু পিণ্ডের কোনোটি যদি সরাসরি এসে পৃথিবীতে আঘাত হানে, সেটি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই কৌশল নিয়ে বিজ্ঞানীরা ভাবছেন বহুদিন ধরেই।
ডাইমরফোসের মতো আকারের কোনো গ্রহাণু পৃথিবীকে আঘাত করলে সেটার প্রভাব হবে একটি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের চেয়েও বহুগুণ বেশি। আর যদি সেই গ্রহাণু এক কিলোমিটার চওড়া হয়, পুরো পৃথিবীতে তার প্রভাব পড়বে।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel