জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মো. রুহুল আমিন ফকির (৬০) নামের এক দরিদ্র কৃষকের জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়া নামের উপজেলা বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের একটি মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে গতকাল রবিবার বিকালে ভুক্তভোগী কৃষক বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান।
অভিযুক্ত রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়া বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও শেখর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের রাখালতলী গ্রামের মৃত আব্দুর রসিদ ফকিরের ছেলে রুহুল আমিন ফকির পৈতৃক সূত্রে দীঘিরপাড় মৌজার ৫১৭ নম্বর খতিয়ানে ৭১৯ নম্বর দাগের ৬০ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছেন। পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত এ জমিতে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও পেঁয়াজের চাষাবাদ করেছেন তিনি। পবিত্র রমজান উপলক্ষে স্থানীয় মসজিদে ১০ দিনের ইতিকাফে বসেন কৃষক রুহুল আমিন ফকির।
এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রবিবার সকালে রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়ার নেতৃত্বে একই ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের মৃত টেপু মিয়ার ছেলে কায়েস মিয়া, দীঘিরপাড় গ্রামের এলাহক মোল্যাসহ ৩০-৪০ জনের একটি দল ওই আবাদি জমির পেঁয়াজ তুলে নিতে শুরু করেন।
খবর পেয়ে মসজিদ থেকে ইতিকাফ ভেঙে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কৃষক রুহুল আমিন। এ সময় আবাদি জমির পেঁয়াজ তুলে নিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের (পেঁয়াজ তুলে নেওয়া লোকজন) হুমকি-ধমকিতে প্রাণভয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসেন। পরে রবিবার সন্ধ্যায় কৃষক রুহুল আমিন ৬০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার ব্যাপারে বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে থানা পুলিশ।
বৃদ্ধ কৃষক রুহুল আমিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দীঘিরপাড় মৌজার ৫১৭ নম্বর খতিয়ানে ৭১৯ নম্বর দাগের ৬০ শতাংশ জমি ভোগদখল করে আসছি। সম্প্রতি জমির মালিকানা দাবি করে বিএনপি নেতা ও শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়া রবিবার সকালে ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে আমার চাষাবাদকৃত ৬০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ তুলে নিয়ে যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। এ ব্যাপারে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
’
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়া বলেন, ‘এই জমিটা আরএস রেকর্ডের মালিকের কাছ থেকে আমার মামারা ক্রয়সূত্রে মালিক। এর মাঝে এসএ রেকর্ডে ভুলক্রমে জমিটা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী রুহুল আমীনের বাবার নামে রেকর্ড হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিএস রেকর্ডের সময় বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ড হয়। আমরা আরএস মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করা দলিল দিয়ে আদালতে মামলা করলে আমাদের পক্ষে আদালত রায় দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘গত সরকারের আমলে আমি বিস্ফোরক মামলায় জেলে গেলে ওই সময় লোকজন নিয়ে কৃষক রুহুল আমীনের পরিবার জমিটির দখলে যায়। আমরা কারো কোনো জমির পেঁয়াজ আনিনি। জমির মালিক হিসেবে ভাগ এনেছি মাত্র।’
পলাশ মিয়া আরো বলেন, ‘শুধু ওই জমিই নয়, ওই মাঠে আরো অনেক জমি আদালত থেকে মামলা করে আমরা পেয়েছি।’
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার ব্যাপারে এক কৃষকের লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে পরিদর্শনকালে পেঁয়াজ বা কোনো লোকজন ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।