জুমবাংলা ডেস্ক: ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন শনিবার সকাল ৮টা। নগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনের ফাঁকা জায়গায় সারি করে রাখা হয়েছে ইট, ব্যাগ, মিষ্টির প্যাকেট, পানির বোতল ও খবরের কাগজ। পাশাপাশি দু’টি লাইনে এসব রাখা হয়েছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজ কেনার জন্য।
জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণের আজকের একটি প্রতিবেদনে পেঁয়াজের জন্য ভোক্তাদের ভিন্নধর্মী এমন অপেক্ষার চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদিন রাজশাহী মহানগরীর ৫টি পয়েন্টে টিসিবির ডিলার খোলা ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। তাই সকাল ৮টায় পেঁয়াজের ট্রাক আসার আগেই মানুষ লাইনে অংশ নেয়। লাইনে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে ক্রেতারা ইট, ব্যাগ, খবরের কাগজ ইত্যাদি রাখে। শনিবারও তাদের এমন কাণ্ডে হাসাহাসি করেন অনেকেই। যারা লাইনে এসব রেখেছেন তাদের কেউ আশেপাশেই ঘুরছেন, কেউবা প্রয়োজনীয় কাজ সারতে, আবার কেউ বাজারে গিয়েছেন। নিজেদের সুবিধার জন্যই এই পদ্ধতি। তাদের প্রত্যাশা ছিলো, প্রয়োজনীয় কাজ সারতেই পেঁয়াজের ট্রাক চলে আসবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের নিরাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে। শনিবার নগরীর কোথাও পেঁয়াজ বিক্রি করেনি টিসিবির ডিলাররা।
রাজশাহীতে পেঁয়াজের বাজার এখনও অস্থিতিশীল। গত ২৪ নভেম্বর থেকে ৪৫ টাকা কেজি দামে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি চলছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সেদিন থেকেই নগরীর পাঁচটি পয়েন্ট থেকে পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতারা। মানুষের এতো ভিড় নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য থাকে পুলিশের পাহারাও।
নগরীর হড়গ্রাম থেকে শনিবার পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলেন আব্দুল মালেক। তিনি একটি খবরের কাগজ লাইনে রেখে গিয়েছিলেন বাজার করতে। সকাল ৯টার দিকে এসে তিনি দেখছিলেন তার কাগজ ঠিক আছে কি না। তিনি বলেন, এর আগে দুইবার এসে এই পদ্ধতি করে পেঁয়াজ কিনে নিয়েছেন। আসলে অনেক বেশি ভিড় হয়। দাঁড়িয়ে থাকতে পায়ে ব্যথা ধরে যায়। তাই বুদ্ধি করে এই পদ্ধতি বের করেন। তার মতো একই কথা বলেন আবদুর রউফ। তিনি নগরীর বড়কুঠি থেকে আসেন। রউফ বলেন, তিনি লাইনে ইট রেখেছেন। লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় না।
লাইনে মিষ্টির প্যাকেট রেখে ঘুরছিলেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাটা কষ্টকর। তাই সবাই এই পদ্ধতি বেছে নেন। তাদের দেখাদেখি তিনিও করেন। তবে সকাল ১০টার পর তারা জানতে পারেন পেঁয়াজের ট্রাক আসবে না। তখন তাদের হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।
টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস প্রধান প্রতাপ কুমার বলেন, মজুত না থাকায় শনিবার রাজশাহীর কোথাও পেঁয়াজ বিক্রি হয়নি। তবে পেঁয়াজ চট্টগ্রাম থেকে আনা হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত একটি ট্রাক পুঠিয়া পর্যন্ত এসেছে। আরেকটি নাটোর পর্যন্ত এসেছে। রাজশাহীতে আসতে দেরি হবে। এগুলো ডিলারদের দেয়ার পর বিক্রয় পয়েন্টে যেতে অনেক দেরি হয়ে যেত। তাই শনিবার পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি। তবে রবিবার থেকে যথারীতি পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ বিক্রি চলবে বলেও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।