লাইফস্টাইল ডেস্ক : অনেকেই এই প্রশ্ন করেন, বাইকের জন্য পেট্রল নাকি অকটেন ভালো? সাধারণত আমাদের দেশে বাইকে এই দুই ধরনের জ্বালানিই ব্যবহার হয়। এর সঙ্গে আমাদের পকেটের স্বাস্থ্য ও বাইকের পারফরম্যান্স জড়িত। যদিও আর্মির কিছু ডিজেল চালিত বাইক আছে, তবে সেগুলো বর্তমানে অচল হয়ে পড়ে আছে। তাই আজকের আলোচনা হবে পেট্রল ও অকটেন নিয়ে।
বাইকে জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদনে প্রায় একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখানে আমি কিছু টেকনিক্যাল বিষয় ব্যাখ্যা করবো, তবে আমার আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে জ্বালানি এবং আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কোন জ্বালানি ব্যবহার করে আমরা বেশি উপকৃত হবো এই বিষয়টি।
অকটেন নাকি পেট্রল— এটা বুঝতে হলে প্রথমেই জানতে হবে, আমরা কোন ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করছি এবং এর মান কেমন। সাধারণত আমরা বাইকে পেট্রল ও অকটেন ব্যবহার করি। প্রকৃতপক্ষে অকটেন ও পেট্রলের নাম দিয়ে কোনো পার্থক্য বোঝা যায় না। আন্তর্জাতিকভাবে এই দুইটিকেই ‘গ্যাসেলিন’ নামে ডাকা হয় এবং এদের রাসায়নিক হঠনও একই (C8H18)।
তার মানে, আমরা একে গ্যাসোলিন, পেট্রল বা অকটেন যেকোনো নামেই ডাকতে পারি। আসলে আন্তর্জাতিকভাবে অকটেন/পেট্রল/গ্যাসোলিন যাই বলি না কেনো, এগুলোকে আলাদা করা হয় রেটিং নাম্বার দ্বারা, যেটাকে অকটেন নাম্বার বা RON (Research Octane Number) বলা হয়। সে হিসাবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গ্যাসোলিন শুরু হয় অকটেন নাম্বার ৮৬ (RON ৮৬) থেকে এবং সেটা সর্বোচ্চ ৯১, এমনকি ১০২-ও হতে পারে।
তবে বিভিন্ন অকটেন নাম্বারের গ্যাসোলিন কিন্তু রাসায়নিকভাবে একই বস্তু। পার্থক্য আসলে এদের সঙ্গে যুক্ত কিছু এডিটিভস (যেমন- ডিটারজেন্ট ও রাসায়নিক পদার্থ) যেগুলো এই জ্বালানির দহন ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় (জ্বালানির সংকোচন, প্রসারণ ও কমবাশনের মাত্রা বাড়ায়)। ফলে বেশি অকটেন নাম্বারের জ্বালানি ব্যবহারে সিলিন্ডারে স্মুথ কমবাশন হয় (পিস্টন, ভাল্ব বা কানেক্টিং রড থেকে কোনো নকিং হবে না)।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত পেট্রলের RON যদি ৮৬-ও হয়, তাহলে আপনার আর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জ্বালানি ব্যবহার করার দরকার নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশে পেট্রলের RON এখনো ৮০! এটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত মানের চেয়েও নিম্নস্তরের। তাহলে কি এই পেট্রল বাইকে ব্যবহারের অযোগ্য! বাস্তবতাটা ঠিক এমন নয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ বাইকাররা কি উচ্চ মানের বাইক ব্যবহার করেন? উত্তরে- না!
আমাদের অধিকাংশই সিঙ্গেল সিলিন্ডার, সিঙ্গেল পিস্টন, দুই ভাল্বযুক্ত এবং ৯:১ এর চেয়ে কম কম্প্রেশন রেশিও নির্ভর ১৫০ সিসি’র নিচে বাইক ব্যবহার করেন। এসব বাইকের অধিকাংশরই ইঞ্জিন পারফরম্যান্স বাড়ানো যায় না। তাছাড়া এখনো দেশে প্রচুর পরিমাণ ২-স্ট্রোক বাইক রয়েছে। সেসব কারণে আমাদের এসব কম ক্ষমতা সম্পন্ন ৪-স্ট্রোক বাইকের জন্য RON ৮০ পেট্রল ঠিকই আছে।
অন্যদিকে ২-স্ট্রোক বাইকের জন্য বেশি RON দরকারও পড়ে না। তবে হ্যা, আপনাকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার ব্যবহৃত পেট্রলের RON ৮০ কি না বা এর সঙ্গে কেরোসিন বা অন্য কোনো ভেজাল মেশানো হয়েছে কি না। আসলে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এমনকি ঢাকাতেও পেট্রলের সঙ্গে কেরোসিন বা অন্য ভেজাল মেশনোটা খুবই সাধারণ হয়ে পড়েছে। ফলে আমরা নিম্ন RON-র পেট্রলও খাঁটিটা পাচ্ছি না। আর ভেজাল পেট্রলে ইঞ্জিন দ্রুত খারাপ হয়ে পড়ে।
সূত্র: বাইক বিডি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।