পেয়ারার উপকারিতার কথা কম-বেশি সবাই জানি। তবে জানলে অবাক হতে হবে যে শরীরের সার্বিক সৌন্দর্যবর্ধনে পেয়ারার পাশাপাশি পেয়ারা পাতার গুরুত্ব অনন্য। পেয়ারা পাতা ত্বকের যত্নে খুবই কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের দাগছোপ দূর করে। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। তা ছাড়া ত্বকের স্বাভাবিক কোমলতা ধরে রাখতে সহায়তা করে পেয়ারা পাতা।
বলা বাহুল্য, পেয়ারা পাতার গুণে দাঁতের বহু সমস্যা থেকে মেলে মুক্তি। পেয়ারা পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ। এ জন্য মুখের দুর্গন্ধ বা দাঁত ও মাড়ির নানা সমস্যা রুখতে পেয়ারা পাতা বিশেষ সহায়ক। এটি চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এতে দাঁতের দাগছোপও চলে যায়।
শরীর চনমনে রাখতেও এর জুড়ি নেই। পেয়ারা পাতা অনেকে পানিতে ধুয়ে লবণ দিয়ে খেয়ে থাকেন। আবার গরম পানিতে ফুটিয়েও এটি খাওয়া যেতে পারে। এর ফলে পাতার গুণ শরীরে ইতিবাচক ফল দেবে। প্রতিদিন সকালে পেয়ারা পাতা পানিতে ফুটিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
হজমের সুবিধায় পেয়ারা পাতার উপকারিতা অনেক। পেটব্যথা, গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা আজকাল অনেকেরই হয়ে থাকে। তখন এটি মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। এক কাপ জলে কচি কয়েকটি পেয়ারা পাতা ফুটিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
অনেকে আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় বেশ ভোগেন। তাঁদের জন্য পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী হতে পারে। কারণ, এতে রয়েছে ল্যাক্সেটিভ উপাদান, যার সহায়তায় পেয়ারা পাতা সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে দেয়। তাই নিয়মিত পেয়ারা পাতা খেলে কেটে যায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা।
শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি বিশেষ সহায়ক। পেয়ারা পাতায় রয়েছে ফাইবার। এটি শরীরের মেটাবলিজমের হার বাড়িয়ে দেয়, যা দ্রুত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। তা ছাড়া এর এমন কিছু গুণ রয়েছে, যার ফলে খাবারের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম বোধ হয়। ফলে শরীরের ওজন কমানো সহজ হয়। জেনে রাখা ভালো, পেয়ারা পাতায় উপস্থিত ফেনোলিক অতিরিক্ত শর্করা শোষণ করতে দেয় না। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এই পাতা চিবিয়ে খেলে ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি নেই।
চুলের যত্নেও এটি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। উপকারী এই পাতায় প্রচুর ভিটামিন বি রয়েছে। এটি চুলের পুষ্টিতে ব্যাপক মাত্রায় সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাতা ব্যবহার করলে চুলের গোড়ায় গ্রন্থি কোষ মজবুত হয়। ফলে চুল পড়া কমে এবং চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় থাকে।
আজকাল অনেক হেয়ার টনিকেও বিশেষ উপাদান হিসেবে পেয়ারা পাতার ব্যবহার লক্ষ করা যায়। এটি চুলের গোড়ায় দিনে ব্যবহারের পাশাপাশি রাতে ঘুমানোর আগেও ব্যবহার করলে দ্রুত ফল লাভ করা যায়। রাতে ঘুমানোর আগে চুলের গোড়ায় এটি লাগিয়ে ম্যাসাজ করে পরদিন সকালে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে কয়েক দিন একটানা ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি চুল ভেঙে যাওয়া রোধ করা সম্ভব। তাই নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে রুটিনে পেয়ারা পাতা যোগ করা যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।