জুমবাংলা ডেস্ক: লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে রঙিন করে তুলেছে। গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে যখন হাঁপিয়ে উঠেছে প্রকৃতি, সেই সময়েও চারদিকে সবুজের বুক চিরে রক্তিম লাল আভা জানান দিচ্ছে তার নয়নাভিরাম রূপের। দেশের ব্যস্ততম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের বাইপাস সড়ক প্রকৃতির এক অপরুপ সাজে সজ্জিত এই কৃষ্ণচূড়ায়।
দুই পাশ খোলা মাঠ, পদ্মা নদী থেকে উঠে আসা হিমেল বাতাস রঙিন কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়া সব মিলিয়ে গ্রীষ্মের এই তপ্ত রৌদেও আপনাকে শীতল করবে এবং সেই সাথে বাড়িয়ে তুলবে আপনার মুগ্ধতা। প্রকৃতির এই রক্ত রঙিন করা সৌন্দর্য শুধু গ্রীষ্মেই পাওয়া যায়।
বাইপাস সড়কসহ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রোদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি। সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীষ্মের ঘাম ঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করে এই সৌন্দর্য।
কৃষ্ণচূড়া বাঙালির কাছে অতিপরিচিত একটি ফুল। বাঙালির কবিতা, সাহিত্য, গান ও নানা উপমায় এর রূপের মোহনীয় বর্ণনা বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মোহনীয় রূপে প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষ এখনো গ্রামবাংলার পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের ছোঁয়া পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষ্ণচূড়া তার রক্তিম আভা ছড়ানোর মাধ্যমে জানান দেয়- সে এখনও টিকে আছে প্রকৃতিকে সাজাবে বলে।
কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এ বৃক্ষ যেন এখন বাঙালির ঐতিহ্যের একটা অংশ হয়ে গেছে সবার অগোচরে। এ দেশে এসে পরিচিত হয়েছে নতুন নামে। অনেকেই মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণের নাম থেকে এ গাছ ও ফুলের নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এর সবচেয়ে বড় খ্যাতি হচ্ছে মোহনীয় রক্তিম আভা। সবুজের বুক চিরে বের হয়ে আসা লাল ফুল এতটাই মোহনীয় যে, পথিচারীরাও থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
কৃষ্ণচূড়া ফুলে রঙিন হয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলার স্টেশন রোড, তোরাই মোড়, বাজার রোড, কৃষ্ণতলা, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ক্যানাল ঘাট, দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, কৃষ্ণচূড়া তার লাল আবীর নিয়ে পাকা সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কৃষ্ণচূড়া তার সমস্ত রঙ প্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয়সহ অনেকেই আসেন ছবি তুলতে আবার অনেককে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় বাইপাস সড়কের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে।
রমিজ সরদার নামের এক পথিক বলেন, এই জায়গাটা খুবই ঠান্ডা। পদ্মা নদী থেকে উঠা আসা বাতাসে গা জুড়ায়। তাছাড়া এখানে অনেকেই আসে ঘুরতে ও ছবি তুলতে। আবার অনেকে গাড়ি থামিয়ে বিশ্রাম নেয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে। ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণচূড়া শুধুমাত্র দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্লোরিডা, টেক্সাসের রিও গ্রান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।