জুমবাংলা ডেস্ক : জামালপুর-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেস। তবে ট্রেনটির প্রতিদিনই শিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারছে না। প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। ছেড়ে যেতেও বিলম্ব হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
জানা যায়, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে পৌঁছানোর কথা থাকলেও প্রতিদিনই ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে জামালপুর রেলস্টেশনে আসছে। মাঝে মধ্যে ট্রেনটি স্টেশনেই আসে না। গত বৃহস্পতিবার জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসেনি। ময়মনসিংহ থেকেই ট্রেনটি ঘুরিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। গতকাল শুক্রবার জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি এসেছে রাত ১০টার দিকে। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
জামালপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ বলেন, ট্রেনটি প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে জামালপুর স্টেশনে পৌঁছানোর কথা এবং রাত ৮টা ১০ মিনিটে জামালপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। জামালপুর থেকে চট্টগ্রামে যাতায়াতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। জামালপুরের জন্য ২২৭টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ১৬০টি, এসি চেয়ার ৫৫টি, এসি বার্থ (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ৬টি এবং নন-এসি বার্থ (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ৬টি। ট্রেনটি যাত্রাবিরতি দেয় পিয়ারপুর, ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, আঠারবাড়ি, কিশোরগঞ্জ, সচরাচর, ভৈরব, আখাউড়া, কুমিল্লা, লাকসাম, ফেনী ও ভাটিয়ারি স্টেশনে। সপ্তাহে এক দিন মঙ্গলবার ট্রেনটির চলাচল বন্ধ থাকে।
এদিকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের অভিযোগ, জামালপুর থেকে চট্টগ্রামের একমাত্র আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টা বিলম্ব করে। সঠিক সময়ে একদিনও ট্রেনটি ছাড়তে পারে না। মাঝে মধ্যে এমন হয় ট্রেন আসেই না। জামালপুর থেকে ৮টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও রাত ১০টাতেও জামালপুর স্টেশনে ট্রেন এসে পৌঁছায় না। প্রতিদিনই ট্রেনটির দেরি হচ্ছে, যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নাজমুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, অনলাইনে আগেই টিকিট কেটে রেখেছিলাম। স্টেশনে এসে শুনি বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন আজ জামালপুর আসবে না। ময়মনসিংহ থেকেই ট্রেনটি ঘুরিয়ে চট্টগ্রামের দিকে চলে যাবে। এখন আমরা হয়রানির মধ্যে পড়েছি। সব সময় এই ট্রেনটি দেরিতে আসে এবং দেরিতে ছাড়ে। কোনোদিন দেখিনি সঠিক টাইমে ট্রেনটি ছেড়ে যেতে।
মো. কামরুল ইসলাম নামের শিক্ষার্থী বলেন, এই ট্রেন সঠিক সময়ে চলাচল করতে পারে না এটা সবাই জানে। বেশিরভাগ সময় ট্রেনটির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে আটকা পড়ে থাকে। এ জন্যই সঠিক সময়ে চলাচল করতে পারে না। এই ট্রেনে আমি বেশি সময় যাতায়াত করি। মাঝে মধ্যে এমনও হয় ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেলে সেই দিন আর ট্রেন আসে না, আটকা পড়ে থাকে। ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পরে ঠিক হলে আবার আসে।
জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. তৌহিদ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে আসতে বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনের ক্রসিংয়ে পড়ে আবার কখনও ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন কারণে সঠিক সময়ে স্টেশনে আসতে পারে না এবং সঠিক সময় ছাড়তেও পারে না। মঙ্গলবার বন্ধের পরের দিন কিছুটা সঠিক সময়ের মধ্যে আসতে পারে। তারপর দিন থেকে আবার দেরি হয়। আরেকটি নতুন ট্রেন থাকলে এই সমস্যার সমাধান হতো।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ থেকে জামালপুর পর্যন্ত রুট বৃদ্ধি করে জামালপুর থেকে চট্টগ্রাম চলাচল শুরু করে। আগে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।