জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার তাজহাট থানা আমলি আদালতের বিচারক আল মেহবুব এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজহাট থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম। ওইদিন বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে বুধবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন।
এছাড়া একই আদালত অপর এক আদেশে রিকশাচালক নাজমুলকে হত্যার ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর স্ত্রী সাথী বেগমকে দুই কার্যদিবসে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক নাজমুল কাদের।
২৩ ডিসেম্বর কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে নাজমুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওইদিন স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসান আলীকে আটক করে পুলিশ।
পরে নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে মামলা করেন মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায়।
তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান প্রধান সে সময় জানিয়েছিলেন, রিকশাচালক নাজমুলের ঝুলন্ত লাশ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে যদি হত্যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
রিকশাচালক নাজমুলের বাড়ি লালমনিরহাটের মুস্তফি এলাকায়। রংপুর নগরীর আশরতপুর ইদগাপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত হাসান আলী আশরতপুর কোর্টপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন। পায়ে সমস্যা থাকায় দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর ব্যক্তিগত একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন নাজমুল।
২২ ডিসেম্বর রাতে ওই রিকশা চুরির অভিযোগে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।
২৩ ডিসেম্বর দুপুরে হাসানের ভাড়াবাড়িতে নাজমুলের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী।
খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে নাজমুলের লাশ উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাজমুলকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার খবর প্রচার করেন পুলিশ কনস্টেবল হাসান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।