জুমবাংলা ডেস্ক: সম্প্রতি সরকারদলীয় হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হযরত সম্বোধন করে আলোচনায় এসেছেন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছেন। তাই শেখ হাসিনার নাম উচ্চারণ করার পূর্বে তার প্রতি সম্মানসূচক একটি শব্দ উচ্চারণ করতে চাই, ‘হযরত শেখ হাসিনা’ তোমাকে অভিবাদন ‘
রবিবার বিকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে শেখ হাসিনাকে ‘হযরত’ বলার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শরীরে আউলিয়া পরিবারের রক্ত বহন করায় এই স্ট্যাটাসে তিনি তাঁকে ‘আওলাদে আউলিয়া’ আখ্যা দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘হযরত শব্দটি শুধুমাত্র নবী, রাসুল, খলিফা, সাহাবা, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনদের নামের আগে ব্যবহার করা হয় না। শত শত বছর ধরে বুজুর্গ, আলেম, মুরব্বী, মমিন, পরহেজগারদের নামের আগে হযরত শব্দটি ব্যবহার হয়ে আসছে। আরবে বাড়িতে কোন মুরব্বী মেহমান আসলে তাকে সম্মান করে হযরত বলে সম্বোধন করে স্বাগত জানানো হয়। একে অপরকে হযরত বলে সম্বোধন করেন। বাংলাদেশেও অনেক পরহেজগার আলেম অপর মেহমানকে হযরত বলে সম্মানিত করেন। আমি নিজেও অনেক ইসলামী জলসায় একজন বক্তা অপর বক্তাকে হযরত বলে সম্বোধন করতে দেখেছি।
হযরত শব্দের বাংলা অর্থ জনাব বা সম্মানিত। হযরত অর্থ লর্ড বা প্রভু নয়। একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানকে হযরত বলে ইজ্জত দিতেই পারেন। এই প্রথা ইসলামী বিশ্বের সর্বত্র চালু আছে। আমাদের দেশেও। এমনকি অনেক পিতা মাতা ইসলামের প্রতি সম্মান দিয়ে নিজের সন্তানের নাম হযরত রাখেন। মহান আল্লাহর ৯৯ নামের সঙ্গে মিলিয়ে সন্তানের নাম রাখেন।
তাহলে এতো গাত্র দাহ কেন ?
কারন আমি বঙ্গবন্ধু কন্যার নামের আগে হযরত ব্যবহার করেছি ?
অন্য কোন ব্যক্তির নামের আগে ব্যবহার করলে তারা ক্ষেপতেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেত্রীর আগে লাগানো যাবে না। ‘তিনিতো মুসলমানই না।’ অথচ তিনি তার শরীরে আওলিয়া পরিবারের রক্ত বহন করছেন। তিনি আওলাদে আউলিয়া।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন, কোরআন তেলাওয়াত করেন, হজ্জ্ব করেছেন বহুবার, সংখ্যা ও অর্থের দিক থেকে বিশ্বে সর্বোচ্চ পরিমাণ মসজিদ নির্মাণ করছেন , গ্রাম পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র প্রবর্তন করি সহী কোরান শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন করেছেন, ইসলামী-আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষার অভাবনীয় উন্নয়ন করছেন, আলেমদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, সম্মান ও সকল সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছেন।
সকল শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে চলেছেন। সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। হজ্ব ব্যবস্থাপনার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। ইসলামের কল্যাণে তাঁর মহৎ কর্মের ফিরিস্তি লিখলে একটি গবেষণা গ্রন্থ রচিত হবে।
এরপরও তাঁকে এবং আওয়ামী লীগারদের মুসলমান মানতে তারা নারাজ। ইসলামের ইতিহাসে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে খোলাফায়ে রাশেদীনের পর যত শাসক, রাষ্ট্রনায়ক এসেছেন ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা থেকে দীক্ষা নিয়ে সবচেয়ে বেশী ইসলাম ও মানবতার সেবা করার পরও তার নামের আগে হযরত শব্দ ব্যবহার করে তাঁর মহৎ কাজের জন্য তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করে আমি মহাপাপ করে ফেলেছি ! এই মুহূর্তে সমগ্র মুসলিম উম্মাহয় তিনিই মজলুম মুসলমানের পক্ষে সবচেয়ে সাহসী ও সরব রাষ্ট্রনায়ক।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।