চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: আগামী ১৪ই মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন, সমাবর্তন বক্তা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ৫ম সমাবর্তন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে নানাবিধ কার্যক্রম করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এরই মধ্যে ৫ম সমাবর্তন উপলক্ষে আগামী ১২ মে থেকে ১৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হাটহাজারী গত বৃহস্পতিবার থেকে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করছে। যার দরুন বিশ্ববিদ্যালয় সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিশ্ববিদ্যালয়টির অভ্যন্তরীণ বেশিরভাগ একাডেমি ও প্রশাসনিক কার্যালয়ের জন্য বিকল্প হিসেবে জেনারেটর কিংবা এইপিএস এর ব্যবস্থা আছে। তাই অসহিষ্ণু তাপদাহে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তির শিকার মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীরাই যাদের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অভ্যন্তরে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ স্থানীয় জনসাধারণ। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হাটহাজারীর নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে জানা গিয়েছে মূলত রুটিন মাফিক কাজের সাথে সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক লাইনে এবং জোবড়া গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে ট্রান্সফরমার বসানোর কাজ চলার কারনে বিদ্যুৎ শাটডাউন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়টির বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনাবাসিক যাদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় মেসে কিংবা টিনের ছাদের কটেজে থাকে। এই তীব্র তাপদাহে তাদের পূর্বের লোডশেডিং এর সাথে এখন অতিরিক্ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিফ মেডিকেল অফিসার থেকে জানা গিয়েছে দৈনিক প্রায় ডজন খানেক শিক্ষার্থী তীব্র তাপদাহের কারনে নানাবিধ অসুস্থতার চিকিৎসা নিতে চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে আসছেন।
এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট কেবল শারীরিক অসুস্থতা নয় একই সাথে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি করছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ জনপদও ভুগছে নানান অসুবিধায়। এবং কি তৈরি হয়েছে পানি সংকটও। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের কষ্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী অনাবাসিক শিক্ষার্থী সহ স্থানীয়রা ক্ষোভে ফুসছেন।
তীব্র তাপদাহে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অসুস্থ হয়ে চমেকে ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী মোঃ মাসুদ আলী বলেন, একে তো কারেন্ট নেই সাথে তীব্র তাপদাহে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এমনিতে ক্যাম্পাসে কারেন্ট থাকলেও বাহিরে সব সময় কারেন্ট থাকে না তার উপর এখন বাড়তি ভোগান্তি। অনাবাসিক শিক্ষার্থী বলে আমাদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেক শিক্ষার্থী মোঃ এনামুল হক বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রশাসন যেমন তেলবাজি করতো, ঠিক একই লক্ষন এখনো দেখা যাচ্ছে। নেই সম্পূর্ণ আবাসিক ব্যাবস্থা। এদিকে সমাবর্তনকে ঘিরে যে রাজকীয় আয়োজন চলছে এতেও ভোগান্তির শিকার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত চলছে লোড সেডিং। প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে চবি মেডিকেল এ গেলেও নেই ভালো চিকিৎসা ব্যাবস্থা। সব মিলিয়ে ভালো নেই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি আগে সাধারাণ শিক্ষার্থীদের সকল সুবিধা দাখিল করা হোক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, বিদ্যুতের লাইন তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না এটা বিদ্যুৎ বিভাগ করে। প্রধান উপদেষ্টার সফরে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজটি করছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের যেন কোন অসুবিধা না হয়, যেন একটানা বিদ্যুৎ না নেয় সেই নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। তারা সেই অনুযায়ী কাজ করছে। হয়তো খুব দ্রুত কাজটা সমাধান করবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির সহকারী প্রক্টর মোঃ নুরুল হামিদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আবাসিক যে এলাকা আছে ঐখানেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আমাদের পুরা ক্যাম্পাসে এটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তারগুলো লাগানো শেষ হয়ে গেলে এটা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
দেড় যুগ পর শিক্ষার জন্য বিশেষ বিসিএস: শিক্ষক সংকট নিরসনে নতুন উদ্যোগ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।