জুমবাংলা ডেস্ক : পাঠ্যপুস্তকে কোরআনবিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সকল পাঠ্যরচনা সিলেবাস থেকে অপসারণসহ শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষানীতি সংশোধন না করলে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের তারা। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আবারও কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে জানায় হেফাজত নেতারা।
রবিবার (৫ মে) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) ‘বর্তমান জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম ও নতুন পাঠ্যপুস্তকের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় শিক্ষা সেমিনারে হেফাজত নেতারা এই দাবি জানায়।
হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেফাজতের নায়েবে আমির ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এ সময় হেফাজতের আমীরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আতাউল্লাহ আমীন ও মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর সঞ্চালনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির খলিল আহমাদ কাসেমী, নায়েবে আমির সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মুফতী জসিম উদ্দীন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মোবারকুল্লাহ, আহমাদ আলী কাসেমী, খোরশেদ আলম কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা জালালুদ্দীন, মুফতী হারুন বিন ইজহার, সহকারী মহাসচিব মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী বশিরুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মুনির হুসাইন কাসেমী, গবেষক ও শিক্ষক ড. আসিফ মাহতাব, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মাওলানা জাবের কাসেমী, মাওলানা এনামুল হক মূসা প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, জাতীয় পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই যথেষ্ট। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আপনাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হলে এই বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাখ্যানের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, দেশের সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও কারিকুলামের ব্যাপারে আপনারা আরো সরব হোন। ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যবই প্রত্যাখ্যান করুন। স্কুলে আপনার সন্তানদের কী শেখানো হচ্ছে তা জনসম্মুখে তুলে ধরুন। আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক আজ হিন্দুত্ববাদের কবলে পড়েছে। অঙ্কুরেই মুসলমানের ছেলে-মেয়েদের ঈমানি চেতনা ধ্বংসের আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের নামে ইসলাম নির্মূলের এই চক্রান্ত আমরা সফল হতে দেবো না ইনশাআল্লাহ।
সেমিনারে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব শায়েখ সাজিদুর রহমান ৭টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শাখায় আবশ্যিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা বোর্ড পরীক্ষায় ‘ইসলামী শিক্ষা বিষয়’ পুনঃ:বহাল করতে হবে। বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত কোরআন বিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সব পাঠ্য-রচনা সিলেবাস থেকে অপসারণ করতে হবে। আরব দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আরবি ভাষার পাঠদান সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করতে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ উদ্দেশ্যে আরবি ভাষা শিখে এগিয়ে রয়েছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগীদের চিহ্নিতকরণপূর্বক অপসারণ করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে দেশের নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের পুনঃসংস্করণ করতে হবে। ২০১৩ থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের প্রতি আমাদের প্রস্তাব ও যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে দেশের জনগণকে ইসলামবিরোধী ও জাতীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি এ শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।
অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ শুধু উদ্বিগ্ন নন। অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। অবিলম্বে শিক্ষা নীতির ভুল চিহ্নিত করে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। ওহীর শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
আজকে আমাদেরকে বদ্ধ ঘরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আবারও কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।