স্পোর্টস ডেস্ক: অবশেষে ইতিহাস ধরা দিলো হাতে। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন, উপমহাদেশের বড় বড় দলগুলো যেখানে নাকানি-চুবানি খায়। সেখানে ইতিহাস গড়ে জিতলো বাংলাদেশ দল। মাউন্ট মুঙ্গানুইয়ের বে ওভালে সিরিজের প্রথম টেস্টে দাপট দেখিয়ে খেলে ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এটি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটে প্রথম জয় টাইগারদের।
আর এটি সম্ভব হয়েছে মূলত বাংলাদেশের পেসার এবাদত হোসেনের সৌজন্যে। স্বপ্ন কোথায় নিয়ে যেতে পারে মানুষকে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এবাদত।
গত ৫ দিন আগে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের টসের পর সমালোচনা চারদিকে। সংবাদমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, আলোচনার বিষয় আবু জায়েদ রাহির পরিবর্তে এবাদত হোসেনকে খেলানো নিয়ে। ক্যারিয়ারের ১১ নম্বর টেস্ট খেলতে নামা এবাদত এর আগে ছিলেন একেবারেই বিবর্ণ। এমনকি এই টেস্টের প্রথম ইনিংসেও সুবিধা করতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে এবাদতের আগুনে বোলিংয়ে ম্যাচ জেতে টাইগাররা।
প্রথম ইনিংসে ৭৫ রান ১ উইকেট নেওয়া এবাদত দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪৬ রানে নেন ৬ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে তোলা এবাদত ভাসছেন প্রশংসা বন্যায়। সতীর্থ থেকে অধিনায়ক, সংবাদ মাধ্যম হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সঙ্গে বোর্ড পরিচালকরা এবাদত বন্দনায় মেতেছেন।
ম্যাচ শেষে এবাদতকে নিয়ে অধিনায়ক মুমিনুল হক বললেন, ‘অবাক নই। আমি জানি, অনেকেই জানে, ও যেদিন ভালো জায়গায় করবে, ওই দল শেষ। তবে এটা ধারাবাহিক ছিল না। শেষ ২-৩ বছর ধরে বোলিং কোচ, আমি ওকে নিয়ে অনেক খেটেছি। ও শেষ কয়েকটি টেস্টে টানা খেলেছে। সেটার ফল কাল আর আজ দিয়েছে। ম্যাচ জিতলাম।’
সঙ্গে যোগ করেন মুমিনুল, ‘গত দুই-তিন বছর ইবাদত অনেক পরিশ্রম করেছে। সে বিমানবাহিনী থেকে এসেছে। সে একজন ভলিবল প্লেয়ার। সে এক কথায় অবিশ্বাস্য বোলিং করেছে। আমাদের কোচিং স্টাফ ঠিক জায়গায় বল ফেলার ক্ষেত্রে তার সঙ্গে অনেক কাজ করেছে। তার স্পেলটা ছিল অবিশ্বাস্য। দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে এমন কিছুই প্রত্যাশা করেছিলাম।’
প্রায় ৯ বছর ও ৪৭ টেস্ট পর বাংলাদেশের কোনো পেসার পেয়েছেন টেস্টে ৫ উইকেটের স্বাদ। ২০১৩ সালে রবিউল ইসলাম শিপলুর পর প্রথম পেসার হিসেবে এবাদত হোসেন ইনিংসে ৫ উইকেট বা তার বেশি নিয়েছেন।
বোর্ড পরিচালক আকরাম খান বলেন, ‘এবাদতের যে কারণটা ছিল ও কিন্তু আগের টেস্ট ম্যাচগুলোতে এ ধরনের পারফরম্যান্স করেনি। কিন্তু তার উপর সবচেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস ছিল নির্বাচকদের, বিসিবি সব সময় ওকে গুরুত্ব দিয়ে গেছে, সব সময় পজিটিভ কথা বলেছে। অনেক সময় অনেক আলাপ আলোচনা হয়েছে কিন্তু ওর উপর আস্থাটা অনেক বেশি ছিল এবং সে অবশেষে সেটা প্রমাণ করেছে।’
সঙ্গে আরো বলেন আকরাম, ‘কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এটা যে আমরা মনে না করি যে এটা ঠিকভাবে হয়েছে, ও যদি পারফরম্যান্সটা নিয়মিত ধরে রাখতে পারে, ধারাবাহিকতা যদি রাখতে পারে অবশ্যই সে ভালো বোলার হবে বাংলাদেশের।’
ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবাদতের একাধিক ছবি। যেখানে সতীর্থরা এবাদতের ট্রেডমার্ক ‘স্যালুট’ সেলিব্রেশনের ভঙ্গি করে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।