জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৬৮ জন মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে।
গত বছরের ২০ অক্টোবর এই লিখিত পরীক্ষা হয়। ওই দিনই প্রশ্নফাঁসের এমন অভিযোগ ওঠে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তারা তদন্ত শেষ করতে পারেনি।
কমিটির সর্বশেষ তথ্য মতে, নিয়োগ পরীক্ষা সরকারি নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় তদন্ত ছাড়াই বাতিল হচ্ছে।
বিএসএমএমইউয়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের তদন্ত চতুর্থ ধাপ পর্যন্ত গিয়ে থেমে আছে। কারণ সব পরীক্ষা বাতিলের পথে। ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে যেসব পরীক্ষা হয়েছে, সব বাতিল হয়ে গেছে।
কারণ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অনুমোদন নেওয়া হলেও এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে নতুন করে আবার নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিএসএমএমইউয়ে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, পত্রিকা ও বেসরকারি টেলিভিশনে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আবেদন থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন সব কিছুতেই অনিয়ম ঘটেছে।
বিজ্ঞপিতে অনলাইনে আবেদনের বিষয় উল্লেখ থাকলেও অফলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও তা না করে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণে ছিল নিয়োগ কমিটি। কমিটির সদস্যরা পেনড্রাইভের মাধ্যমে প্রশ্ন চুরি করে তা চাকরিপ্রত্যাশীদের অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের মধ্যে নিয়োগ কমিটির প্রধান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের একান্ত সচিব-১ ডা. মোহাম্মদ রাসেল, একান্ত সচিব-২ দেবাশীষ বৈরাগী, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. রসুল আমিন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহিদুল ইসলাম ও কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইবনে কবিরের নাম এলেও তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
৩০-৪০ লাখ টাকায় প্রশ্ন বিতরণের অভিযোগ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১০টি করে প্রশ্ন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রশ্ন রাখা হয় নিয়োগ কমিটির সভাপতি ডা. ছয়েফ উদ্দিনের কাছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের দেওয়া প্রশ্ন থেকে দেবাশীষ বৈরাগী ও তাঁর সহযোগীরা ৩০০ প্রশ্ন প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেন এবং তা চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকায় বিতরণ করেন। মডারেশন বোর্ডের সদস্যরা ৩০০ প্রশ্ন থেকে ১০০ প্রশ্ন বাছাই করেন এবং ওই প্রশ্নেই পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাঁরা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার মডারেশনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা মডারেশন কক্ষে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা প্রভৃতি ডিভাইস নিয়ে ঢুকতে পারেন না। কক্ষে প্রবেশের আগে তাঁদের দেহ তল্লাশি করার কথা। কিন্তু সেটিও করা হয়নি।
পেনড্রাইভের মাধ্যমে প্রশ্ন চুরি হয়েছে—এমন ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও তদন্তে এর প্রমাণ মেলেনি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল।-কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।