প্রাচীন মানুষের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে জিন বিজ্ঞানীরা প্রাচীনকালের মহামারি বা অতিমারিতে মৃত্যুহার এবং টিকে থাকার হার খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। ১৩৪৬-১৪৫২ সাল পর্যন্ত চলমান ইউরোপীয় প্লেগ রোগ ‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারিতে ইউরোপের প্রায় অর্ধেক মানুষ মারা গিয়েছিল।
জেনিফার ক্লাংক এবং তার সহকর্মীরা ব্ল্যাক ডেথে মারা যাওয়া কিছু লাশের জিনোটাইপ নিয়ে কাজ করেছেন, যাদের সমাহিত করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় লন্ডনের স্মিথফিল্ড গণকবরে। যারা মহামারিতে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং যারা মহামারির ধাক্কা সহ্য করে পরবর্তীতে স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুবরণ করেছেন, সেই দুই ধরনের মানুষের থেকে দুই ধরনের জিনগত ফলাফল পেয়েছেন জেনিফার ক্লাংক।
তারা এমন অনেক জিনের সন্ধান পেয়েছেন যেগুলোর কাঠামোতে ব্ল্যাক ডেথ এবং ব্ল্যাক ডেথের পর বেশ বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। ওই জিনগুলো হয় মানুষকে মহামারির প্রকোপেও টিকে থাকতে সাহায্য করেছে বা মৃত্যুর দোরগোড়ায় ঠেলে দিয়েছে। তারা ওই ইমিউনো সেল লাইন নিয়ে পরীক্ষা করেছেন যেগুলো মহামারির জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার (Yersinia pestis) বিপক্ষে শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ওই নিরীক্ষায় দেখা গেছে, ব্ল্যাক ডেথের সময় গুরুত্বপূর্ণ এই জিনগুলো যখন এই রোগজীবাণুর সংস্পর্শে এসেছিল, তখন প্রতিরক্ষা কোষগুলোতে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ এই জিন পরবর্তী প্রজন্মে বাহিত হলে তা, তা ওই প্লেগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারত।
নিঃসন্দেহে এ বছর সবচেয়ে আলোচিত খবরগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল, সভান্তে প্যাবোর ‘শারীরবিদ্যা’ বা ‘চিকিৎসা’ বিভাগে নোবেল পুরষ্কার জয়। তিনি বিলুপ্ত হোমিনিনদের জিন এবং মানববিবর্তন বিষয়ে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য নোবেলের পুরষ্কারের জন্য ভূষিত হয়েছেন। তিনি বর্তমান মানবপ্রজাতির নিকটবর্তী বিলুপ্ত প্রজাতি নিয়ান্ডারথালদের জিনোম সিকোয়েন্স বা জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন।
নানান সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও, বিজ্ঞানীরা আফ্রিকা থেকে ডিএনএ অনুসন্ধানের মাধ্যমে মানবজাতির নৃতাত্ত্বিক তথ্য জানার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারিতে মার্ক লিপসন এবং তার সহকর্মীরা মালাউয়ি, তাঞ্জানিয়া, এবং জাম্বিয়ার প্রত্নতত্ত্বস্থল থেকে ছয়জন প্রাচীন মানুষের ডিএনএ উদ্ধার করেছেন।
আজকের দিনের আফ্রিকার লোকজনের উদ্ভব মূলত চারটি আলাদা গোষ্ঠী থেকে। নতুন গবেষণায় তারা যোগ করেছেন, এই চার গোষ্ঠীর মধ্যে তিন গোষ্ঠী ছিল পূর্ব আফ্রিকার আদি বাসিন্দাদের পূর্বপুরুষ। পরবর্তীতে চারটি গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যেই প্রজনন ঘটিয়ে সৃষ্টি করেছে ভিন্ন প্রকরণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।