ইমরুল কায়েস রানা: আত্মীয়-পরিচিতজনেরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক; তালিকায় দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আর কত? এর শেষ কোথায়?
দ্বিতীয় প্রজন্মের অন্যতম রোমান্টিক কবি জন কিটস ২০০ বছর আগে ইংরেজি সাহিত্যের ৫টি বিখ্যাত গীতিকাব্যের একটি- ‘Ode to a Nightingale’ রচনা করেন। নিয়মিত ছন্দের ৮টি stanza এর কবিতাটি বিভীষিকাময়-যন্ত্রণাকাতর জীবন থেকে মুক্তি লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা দিয়ে শুরু। নাইটেংগেলের সম্মোহনী গানে আসক্ত হয়ে কবি বাস্তব ভুলে যান। কবি মন আফিম খেয়ে বিস্মৃতির লিথি নদীতে ডুবে যেতে চায়:
“My heart aches, and a drowsy numbness pains
My sense, as though of hemlock I had drunk, Or emptied some dull opiate to the drains
One minute past, and Lethe-wards had sunk:”
এভাবে কবি কিটস নাইটেংগেলের গানের মায়ায় স্বপ্নছায়ার কল্প রাজ্যে হারিয়ে যান। কারণ এ পৃথিবী শুধু বেদনা ও হতাশার নাম মাত্র। কবি হৃদয় সীমাহীন দুঃখ-কষ্টে নিমজ্জিত; তাই নাইটেংগেলের গানের আশ্রয় নিয়ে কবি এই নশ্বরলোক ছেড়ে অবিনশ্বরে বিলীন হতে চান। কবিতার পাখায় ভর করে তিনি অদৃশ্যলোকে চলে যান। তাঁর মোহভঙ্গ হয় যখন নাইটেংগেল গান শেষ করে উড়ে যায়; সঙ্গে সঙ্গে ধূলির ধরায় ফিরে আসেন কবি। ৮০ লাইনের কবিতাটির শেষ দুই পংক্তিতে কিটস বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে ভাবেন:
“Was it vision, or wanking dream?
Fled is that music:- Do I wake or sleep?”
অপ্রাকৃত আবহ আর কল্পনার অসামান্য মোহনীয়তায় কবিতাটি এক অনবদ্য শিল্প হয়ে উঠেছে। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও ভীষণ মুগ্ধ ছিলেন কিটসে। ইন্দিরা দেবীকে এক পত্রে কবিগুরু লেখেন- “যত ইংরাজ কবি জানি, সব চেয়ে কীটসের সঙ্গে আমার আত্মীয়তা আমি বেশী অনুভব করি।” জন কিটসের মত ইদানিং মেন্টাল ফ্লাইটে করে ‘রিয়েল ওয়ার্ল্ড’ থেকে ‘আইডিয়াল ওয়ার্ল্ড’ এ চলে যাই প্রায়শই; বর্তমানের গুমোট পরিবেশ থেকে রেহাই পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করি। কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হয় অল্পক্ষণেই; তিক্ত-রূঢ় বাস্তবতায় ফিরে আসতে বাধ্য হই!
কত দিন নাগাদ অভিশাপমুক্ত হবে এ পৃথিবী? প্রাণভরে আগের মতো আবার শ্বাস নেবো কবে?
লেখক: প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।