জুমবাংলা ডেস্ক: সংসদে প্রাথমিক শিক্ষকদের পেনশন বিষয়ে আজ কথা বলেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। প্রাথমিক স্তরে যেসব শিক্ষকের চাকরি-সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা জটিলতা নেই, তাদের পেনশন যথাসময়ে মঞ্জুর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য তুলে ধরেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
গাইবান্ধা-১ আসনের সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নব জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকের চাকরি এবং বেতন ভাতা নির্ধারণজনিত সমস্যার কারণে তারা অতিরিক্ত গৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাদান/ফেরত দিয়ে তাদের পেনশন নিচ্ছেন না।
জাকির হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সকল অবসর ভাতা মঞ্জুর করেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের পেনশন কেস প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও জেলা পর্যায়ে কল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে সঙ্কটে থাকা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা নিতে কেন্দ্র খোঁজা হচ্ছে। সহকারী শিক্ষক পদে রেকর্ডসংখ্যক আবেদন পড়ায় এ বছর পরীক্ষা নিতে রীতিমতো কেন্দ্রসঙ্কটও প্রকট হয়েছে। মোট ৩২ হাজার সাত শ’ শিক্ষক নিয়োগের টার্গেট থাকলেও এবারে আবেদন জমা পড়েছে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬৩টি। ফলে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বড় পরিসরের এই পরীক্ষা আয়োজনে কেন্দ্রও দরকার হবে আগের তুলনায় অনেক বেশি।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসায় এখন প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ক্লাস এবং পরীক্ষার কাজে ব্যস্ত হচ্ছে। ছুটির দিনগুলোতেও ব্যস্ত থাকছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে সম্ভাব্য আগামী ডিসেম্বরে নিয়োগ পরীক্ষার মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিসরের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ভেনু খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে (ডিপিই) বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে।
সূত্র মতে, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার ভেনু ভাড়া বা কেন্দ্র খরচেও বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় হবে সরকারের। প্রাথমিকভাবে শুধু কেন্দ্রখরচ হিসেবেই এই ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় পৌনে ৯ কোটি টাকা। ডিপিইর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের বছরগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে আসনপ্রতি কোনো খরচ হিসাব করা হতো না। শুধুমাত্র ভেনু হিসাব করেই মোট টাকার বাজেট করা হতো। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানই ভেনু হিসেবে তাদের ক্লাসরুম ব্যবহার করতে দিতে রাজি হচ্ছে না।
এই অবস্থায় ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন ডিপিইর কর্মকর্তারা। তারা কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ভেনু হিসেবে তাদের ক্লাসরুম ব্যবহার করতে দিতে রাজি হয় তাহলে যতজন আবেদনকারী তাদের প্রতিষ্ঠানে বসে পরীক্ষা দেবে সেই হিসেবেই ওই প্রতিষ্ঠান টাকা পাবে। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান যদি পরীক্ষার ভেনু হিসেবে ব্যবহার করতে দেয় তাহলে ওই কেন্দ্রে যদি এক হাজার আবেদনকারী পরীক্ষা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্র ফি হিসেবে আসনপ্রতি ৬৬ টাকা হিসেবে ৬৬ হাজার টাকা পাবে।
প্রাথমিকে শিক্ষকস্বল্পতা দূর করতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৩২ হাজার ৭০০ সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, এ নিয়োগ সম্পন্ন হলে শিক্ষকরা আরো স্বাচ্ছন্দ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে পারবেন।
অন্য দিকে ডিপিই সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বরে পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি থাকলেও এখনো কেন্দ্র নির্ধারণের (সিলেক্ট) কিছু কাজ বাকি আছে। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা হচ্ছে কম সময়ের মধ্যে এই পরীক্ষা আয়োজন করার। এ জন্যই কেন্দ্র ফি বাড়ানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ডিসেম্বর পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলেও জানুয়ারিতে পরীক্ষা নেয়া যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।