
নিজস্ব প্রতিবেদক: আদালত পর্যন্ত গড়ানোর পর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীতে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের নিয়ম বাতিল করেছে সরকার। এ সংক্রান্ত নির্দেশাবলীর সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ বাতিল করে সম্প্রতি আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
যে নির্দেশাবলীর আলোকে বহিষ্কার করা হতো তার সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ রদ করায় এখন থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনীতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের আর বহিষ্কার করা যাবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (সংস্থাপন) মো. দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন, ওই নির্দেশাবলী রহিত করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রাথমিক সমাপনীতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের আর বহিষ্কারের সুযোগ থাকল না।
পঞ্চমের সমাপনী নিয়ে সরকারি নির্দেশালীয় ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে ‘শৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা বলা ছিল।
এই অনুচ্ছেদের আওতায় পরীক্ষার কেন্দ্রে কোনও শিক্ষার্থী একে অন্যের সঙ্গে কথা বললে, অননুমোদিত কাগজপত্র বা বস্তু সঙ্গে রাখলে, অন্যকে দেখানোর কাজে সহযোগিতা করলে, উত্তরপত্র ছাড়া অন্যকিছুতে লিখে আনলে তাকে ওই বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার অথবা পরীক্ষা বাতিল করা হতো।
ওই অনুচ্ছেদ বাতিল হলেও ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা যেন কোনও অসাধুপন্থা অবলম্বন না করতে পারে সে বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি বসে করণীয় নির্ধারণ করবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আসলে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা নকল করে না বা এসব বোঝেও না। অনেক সময় অভিভাবকরা সন্তানদের বেশি নম্বর পাইয়ে দিতে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেন, অনেক সময় শিক্ষকরাও এসবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মূলত এসব ঠেকাতে বহিষ্কার ছাড়া অন্য কি করা যায় সে বিষয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।
গত ১৭ থেকে ২৪ নভেম্বর এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চলাকালে প্রায় দুইশ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
‘পিইসি পরীক্ষায় শিশু বহিষ্কার কেন’ শিরোনামে দৈনিক দেশ রূপান্তর গত ১৯ নভেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জামিউল হক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২১ নভেম্বর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় শিশুদের বহিষ্কার করা কেন অবৈধ হবে না, সেই সঙ্গে এবারের পরীক্ষায় বহিষ্কার হওয়া শিশুদের ফের পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা ‘প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নির্দেশনাবলীর ১১ নম্বর নির্দেশনা (যার আওতায় শিশুদের বহিষ্কার করা হয়েছে) কেন অবৈধ হবে না- তাও জানতে চায় আদালত।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৮ ডিসেম্বর হাই কোর্ট আদেশ দেয়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে বহিষ্কৃতদের ২৮ ডিসেম্বর মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে হবে। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নতুন করে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছে। ২৪, ২৬ ও ২৮ ডিসেম্বর তাদের পরীক্ষার সূচি রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।