জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের মণিরামপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইকলাস হাসান হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময় ধারণ হওয়া ভিডিও, নিহতের স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে খুনের রহস্য খুঁজে বের করেছে পুলিশ।
সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া প্রেমিকার সঙ্গে চলাফেরা মেনে নিতে না পেরে মৃদুল নামে অপর এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইকলাসকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত ইকলাস, হত্যাকারী মৃদুল ও তাদের প্রেমিকা আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ইকলাস যশোরের মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজ এবং মৃদুল ও সেই ছাত্রী পলাশী কলেজের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ইকলাসের নানা আইয়ার আলী বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মণিরামপুর থানায় মৃদুলসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মৃদুল মণিরামপুরের এড়েন্দা গ্রামের আলা-উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পৌনে ৭টার মধ্যে তিনি ইকলাসকে হত্যা করে মরদেহ উপজেলার পলাশী মোড় জামে মসজিদের পাশে ফেলে পালিয়ে যান। হত্যার পুরো ঘটনাটি পলাশী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিসি ফুটেজে ধরা পড়েছে। পুলিশ আলামত হিসেবে সিসি ফুটেজটি উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, পলাশী কলেজেরই এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীর সঙ্গে মৃদুলের প্রেমের বিচ্ছেদ ঘটে ৫-৬ মাস আগে। এরপর ইকলাসের সঙ্গে সেই ছাত্রীর সম্পর্ক হয়। প্রতিদিন সকালে ইকলাস ও সেই ছাত্রী এক সঙ্গে বাসুদেবপুরে প্রাইভেট পড়তে যেতেন। তারা দুইজনে এক সঙ্গে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পলাশী স্কুলের সামনে একে অপরের জন্য অপেক্ষা করতেন। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি মৃদুল। মঙ্গলবার সকালে সেই ছাত্রীর সামনে থেকে ধরে নিয়ে ইকলাসকে হত্যা করা হয়।
মণিরামপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, পলাশী হাইস্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ইকলাস পলাশী হাইস্কুলের সামনে পৌঁছালে একজন তাকে টেনে হিঁচড়ে ওই স্কুলের মাঠে নিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে স্কুলের দেয়ালের সঙ্গে মাথায় আঘাত করলে ইকলাস অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে তাকে স্কুলের পাশের মসজিদের কাছে নিয়ে বুকের ওপর আঘাত করতে থাকে। এতে ইকলাসের মৃত্যু হলে পালিয়ে যান সেই যুবক। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে সকাল ৬টা ৩২ মিনিট থেকে ৬টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে।
শিকদার মতিয়ার রহমান আরো জানান, এ ঘটনায় মৃদুল নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা সেই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি প্রেমের বিষয়টি স্বীকার করেননি। তাকে মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে। মৃদুল পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
নিহত ইকলাস হোসেন বাঘারপাড়ার যাদবপুর গ্রামের আবু হানিফের ছেলে। পাঁচ বছর বয়স থেকে তিনি যশোর সদরের রুদ্রপুর গ্রামে নানা আইয়ার আলীর বাড়িতে থাকতেন। রুদ্রপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বাণিজ্য শাখায় তার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন সকালে মণিরামপুরের বাসুদেবপুর গ্রামে ইব্রাহিম নামে এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে আসতেন ইকলাস। মঙ্গলবার সকালেও পড়ার উদ্দেশ্যে নানা বাড়ি থেকে বের হন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।