জুমবাংলা ডেস্ক: নীলফামারীর জলঢাকায় প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে মারা গেছেন রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী। তবে তার মৃত্যু নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিবেশী গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে রিমুকে হত্যার অভিযোগ উঠলেও সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে একাধিক সুত্র দাবি করেছে।
নিহত রিমু রংপুর কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং নীলফামারীর সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মানুষমারা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে।
পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে পাশের সীমান্তবর্তী জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের টেঙ্গনমারীতে কোচিং সেন্টারে পড়তে যান রিমু।
এসময় রিমুর তার প্রেমিক কচুকাটা ইউনিয়নের কচুকাটা গ্রামের আব্দুল্লাহ হোসেনের ছেলে ফয়সাল মোটরসাইকেল নিয়ে ওই কোচিং সেন্টারের সামনে যান এবং সেখান থেকে রিমুকে তুলে নিয়ে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যে সকাল পৌনে নয়টার দিকে জলঢাকা উপজেলার রাজারহাট নামক স্থানে একটি ট্রলিকে সাইড দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন রিমু।
তাৎক্ষনিক ফয়সাল তাকে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রিমুর মাথায় আঘাত গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে রিমুকে রংপুর মেডিক্যা্ল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন ফয়সাল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিমু। এরপর মেডিকেলে লাশ রেখে পালিয়ে যান ফয়সাল।
রাত সাড়ে দশটায় নিহত রিমুর বড়ভাই আরিফুজ্জামান ইমন মুঠোফোনে বলেন, সকালে কোচিং সেন্টারে গেলে সেখান থেকে ফয়সাল জোরপূর্বক রিমুকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার বোনের বান্ধবীরা তাকে জানিয়েছেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে দুর্ঘটনা হিসেবে প্রচার চালিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করেন ফয়সাল।
তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং বেলা ১২ টায় মুঠোফোনে বোনের মৃত্যুর খবর জানার পর বাড়ি ফিরে আসেন। রিমুর লাশ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জলঢাকা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ইমন।
কচুকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, ফয়সালের সঙ্গে নিহত রিমুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে এলাকার লোকমুখে জানতে পেরেছি। তারা রাজার হাটে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পরে বলে সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
নীলফামারী সদর থানার ওসি (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী বলেন, লোকমুখে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। নিহতের বাড়ি নীলফামারী সদর থানায় হলেও ঘটনা জলঢাকা থানা এলাকায় হওয়ায় সেখানকার থানা পুলিশ বিষয়টি দেখছে।
রাত সোয়া ১১ টায় জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, নিহত রিমুর বাবা থানায় এসেছেন। তিনি লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা কি অভিযোগ দিচ্ছেন তার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।