জুমবাংলা ডেস্ক : গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে ফোন দেয়াকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। তবে অনেক ছাত্র বলেছেন প্রেম নিবেদন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে সংঘর্ষ।
রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মারাত্মত আহত ৫ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ফোন করে আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অঙ্কিতের সাথে দেখা করতে চায়। রবিবার ওই ছাত্রী দেখা করতে আসলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অঙ্কিতের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অঙ্কিতকে মারধর করে। বিষয়টি মীমাংসা করতে তার সহপাঠীসহ আইন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী আসলে সংঘর্ষ বাঁধে।
এ খবর দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের সামনে অবস্থান নিয়ে আবারো সংঘর্ষ বাঁধে। দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং ফিজিক্স বিভাগের ক্লাশরুমের জানালা ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে আহত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুই জন এবং আইন বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান, আইন অনুষদের ডিন মো: আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. হাসিবুর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অঙ্কিতকে মারপিট করে। রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর সাথে অঙ্কিতের প্রেম নিবেদনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অঙ্কিত জানান, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে খুলনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাওনের সাথে আমার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে শাওন আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে তার এক বান্ধবীকে কল দিয়ে কিছু সময় কথা বলে। পরবর্তীতে তার (শাওন) ওই বান্ধবী আমাকে পুনরায় কল দেয়। আমি ওই সময়ে ব্যস্ত থাকায় কল রিসিভ করতে পারিনি এবং পরবর্তীতে কল রিসিভ করলে সে আমার সাথে দেখা করতে চায়।
তিনি বলেন, আমি তাকে রোববার দেখা করার কথা বলি। আজ সে যখন আমার সাথে দেখা করে, তখন পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের দু’জন শিক্ষার্থী এসে আমার পরিচয় জানতে চায় এবং আমি আমার পরিচয় দেয়ার পরপরই আমাকে মারতে শুরু করে। আমার সাথে থাকা সহপাঠী ঘটনাটি বিভাগের অন্যান্যদের জানালে তারা ঘটনাস্থলে যায়। তখন তাদের ওপরও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা হামলা করে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ জানান, অঙ্কিত দীর্ঘদিন যাবৎ ফেসবুকে আমাদের এক ছোটো বোনকে উত্যাক্ত করছিলো। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য আইন বিভাগের অঙ্কিতকে আমরা ডাকি। এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা করে।
এদিকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রক্টোর ড. রাজিউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সভা চলছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন শান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রক্টোর ড. রাজিউর রহমান জানিয়েছেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মনে করেছে যে আমি আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছি। এমন ভুল বুঝেই শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ দাবি করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



