মূলত বাসের ঘূর্ণন গতির জন্য এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। নক্ষত্রের জন্মস্থান ঘূর্ণনশীল গ্যাসীয় মেঘের মধ্যেও অনেকটা এ ধরনের ঘটনাই ঘটে। একদিকে শক্তিশালী মহাকর্ষ চায় গ্যাসগুলো টেনে ভেতরের দিকে নিয়ে আসতে। অন্যদিকে, গ্যাসীয় মেঘের ঘূর্ণন থেকে উদ্ভূত বল চেষ্টা করে এদেরকে বাইরের দিকে ছিটকে ফেলে দিতে।
এই দুইয়ের যুগপৎ প্রভাবে প্রোটোস্টারের চারদিকে ডিস্ক আকৃতির একটি গ্যাসীয় মেঘের এলাকা তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক’। সুবিশাল এলাকা নিয়ে অবস্থান করে এগুলো। ডিস্কের ব্যাসার্ধের মান হতে পারে প্রায় ১ হাজার অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট পর্যন্ত।
প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কে থাকা গ্যাসগুলো ক্রমে ঠান্ডা হয়ে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আসতে শুরু করে। একসময় সেখানে থাকা গ্যাস ও ধূলিকণা ঘনীভূত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে জোড়া লেগে যায়। ফলে ক্রমে তৈরি হয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সব কঠিন পদার্থ। এভাবে প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কের গহীনে খুব নিভৃতে সূচনা হয় এক বিশাল কর্মযজ্ঞের। যার সমাপ্তি ঘটে গ্রহদের মতো বিশাল স্থাপনা গঠনের মাধ্যমে। অর্থাৎ, প্রোটোস্টারদের ঘিরে থাকা প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক থেকেই শুরু হয় আমাদের চেনা-অচেনা সব গ্রহের গল্পগাঁথা।
প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক থেকে গ্রহদের জন্ম প্রক্রিয়ার গল্প শুনতে শুনতে এতক্ষণে নিশ্চিতভাবে পাঠকদের মনে বেশ কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে। যেমন মহাবিশ্বের সব নক্ষত্রের জন্মের সময়েই কি প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক গঠিত হতে পারে? যদি সবার বেলাতে এমনটা হয়, তাহলে তো প্রতিটি নক্ষত্রকে ঘিরে কমপক্ষে একটি হলেও গ্রহের অস্তিত্ব থাকার কথা। এমনকি অস্তিত্ব থাকতে পারে আমাদের সৌরজগতের মতো প্ল্যানেটারি সিস্টেম বা গ্রহব্যবস্থার।
বিজ্ঞানীরা প্রথমেই দৃষ্টি ফেরালেন গ্যালাক্সিগুলোতে বিস্তৃত গ্যাসীয় মেঘগুলোর দিকে। সেখানে প্রায়শই জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন নক্ষত্র। বিজ্ঞানীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল জন্ম প্রক্রিয়ায় থাকা নক্ষত্রগুলোতে প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কের অস্তিত্ব শনাক্ত করা। যদি সত্যি সত্যি সব নক্ষত্রদের ঘিরে এদের দেখা মেলে, তাহলে শক্ত ভিত পাবে মহাবিশ্বে অগণিত এক্সোপ্ল্যানেটের অস্তিত্ব থাকার তত্ত্বটি। এক্সোপ্ল্যানেট মানে বহিঃসৌরগ্রহ। সৌরজগতের বাইরের গ্রহ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।