বিনোদন ডেস্ক: সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম হাসান সরকার। যেকোনো চরিত্রেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন তিনি। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে শুটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে শুটিংয়ে চায়ে চিনি কম হওয়ায় প্রোডাকশন বয় রাব্বির মুখে গরম চা ঢেলে দেওয়ার একটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে এই অভিনেতার বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন মিডিয়া প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার গণমাধ্যমের কাছে এমন অভিযোগ করেন। তারপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোাগযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কিন্তু এ বিষয়ে গত দুদিন ধরে তিনি কোনো কথা না বললেও অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
প্রোডাকশন বয় রাব্বির শরীর পুড়ে যাওয়ার খবরটি মিথ্যা বলে জানান শামীম হাসান সরকার। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা বার্ন ইস্যু না। বার্ন ইস্যুটা সাজানো, মিথ্যা-বানোয়াট। যে ছবিটা ছড়িয়েছে, সেটা পরিকল্পিতভাবে তোলা। ঘটনার দিন সেটে ঢোকার পর আমাকে চা দেওয়া হয়। চা মুখে দিয়ে বুঝতে পারি তিতা ও ঠান্ডা। আমি বলি, এটা কোনো চা হলো? পরে বলি এই চা তুমি খাও। কিন্তু রাব্বি খায়নি। আবারও বলি, এটা তুমি খাও। এ কথাগুলো হাসতে হাসতে বলেছিলাম। তিনবার চা খেতে বলার পরও রাব্বি চা খায় না এবং কিছু বলেও না। পরে আমি এগিয়ে গিয়ে বলি, তুমি চা খাও। এগিয়ে গিয়ে চা দেওয়ার সময় কাপ থেকে চা গিয়ে পড়ে রাব্বির শরীরে। চা ঠান্ডা ছিল। স্কিন পুড়ে যাওয়ার মতো গরম ছিল না।
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি জীবনে দুই ভাইয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হতেই পারে। ও তো আমার সহকর্মী। রাব্বি সেটেই ছিল, ওকে সরি বলা হয়েছে। ও আঘাত পাইছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রাব্বি আমাদের সেটেই ছিল। দুপুরে খাবার রাব্বি খাইয়েছে। অন্য শিল্পীরাও ছিলেন। হঠাৎ করে রাব্বিদের সংগঠন থেকে আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলো। আমি রাজি হইছি। কারণ, ভুল তো আমি করেছি। আমি ক্ষমা চাইতে রাজি। যাই হোক, সংগঠন থেকে সেটে আসে। একজন রাব্বির কিছু ছবি তুলে নিয়ে আসে। তাতে দেখি, রাব্বি দুঃখি দুঃখি চেহারা করে বেডে শুয়ে আছে। কিন্তু চা পড়ে রাব্বির শরীর যদি পুড়ে গিয়ে থাকে, তবে তো সেটা দুপুর ১২টার দিকে হওয়ার কথা। বিকাল ৪টার দিকে অনেকটা সুস্থ হওয়ার কথা। আর ওই ঘটনার পর আমি নিজে চেক করে দেখেছি কোথাও পুড়েছে কিনা। না, ওই সময়ে রাব্বির শরীরে আমি কোনো ক্ষত পাইনি।’
এ ঘটনার পর শামীম হাসান সরকার রাব্বির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তা জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, ‘সংগঠনের একজন বলেন, আপনি কোনো চিকিৎসার খরচ দিলেন না। আমি বললাম, আমি সব করতে রাজি। এ ঘটনার জন্য আমি সরি। আর এসব কথা আমি সবার সামনে বলেছি। বিকেল ৫টার দিকে আমি হাসপাতালে লোক পাঠাব, তখন বলে ছেলেটা ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে। কিন্তু প্রথমে আমাকে বলা হয়েছে, রাব্বির শ্বাসনালী পুড়ে গেছে, তাকে হাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। এসব কথা শুনে আমার খুব খারাপ লেগেছে। কিন্তু মিলাতে পারছিলাম না। কারণ, এমনটা তো হওয়ার কথা না।
টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চাননি শামীম হাসান সরকার। তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বিকেল ৬টার দিকে রাব্বি সেটে আসে। এ সময় সবাই ছিলাম। রাব্বির হাত ধরে বলি, আমি সরি। তুমি যদি মাফ না করো তাহলে তো আল্লাহ মাফ করবে না। কিন্তু বাকি যারা সেটে ছিলেন না, তারা এ বিষয়ে আরও বেশি কনসার্ন হয়ে গেলেন। অন্যান্য মানুষও বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন। কারণ, আপনাকে যেমন সবাই ভালোবাসেন না, আমার ক্ষেত্রেও তাই। এটা যেকোনো সেক্টরে ঘটে থাকে। যাই হোক, বিষয়টি মিটে গেল। রাব্বির চিকিৎসা বাবদ ৪২০ টাকা বিল হয়েছিল। আমি ওকে ৩ হাজার টাকা দিয়ে দিই। এ-ও বলি, তুই আমার ছোট ভাই, ফল খেয়ে নিস, দ্রুত সুস্থ হয়ে যা। এরপরও যদি টাকা লাগে আমি আছি। আবার বিষয়টা এমনও না যে, টাকা দিয়ে আমি ধামাচাপা দিতে চেয়েছি। ও টাকা চায় নাই, আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে এটা করেছি।
এর আগে, অভিনেত্রী অহনার সঙ্গে গোপনে বিয়ে করা নিয়ে আলোচনায় আসেন শামীম হাসান। মূলত, অভিনেতাই মজার ছলে বিষয়টি উসকে দেন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে ‘বিবাহের হলফনামা’ প্রকাশ করেন শামীম। অহনাকে ট্যাগ করে দেওয়া সেই পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ।’
শামীম হাসান সরকারের সেই পোস্টটি মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনদের অনেকেই তাদেরকে অভিনন্দন জানান। তবে কেউ কেউ সেটিকে ‘নাটকের গল্প’ বলেও মন্তব্য করেন, তাদের ধারণাই ঠিক হয়। বাস্তবে নয়, বিষয়টি নাটকের ‘বিবাহের হলফনামা’ ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।