আমরা সাধারণত সঠিকভাবে শ্বাস–প্রশ্বাস গ্রহণ করি না। প্রায়ই নাক বা মুখ দিয়ে সামান্য বাতাস টেনে নিয়ে ছেড়ে দিই। এর ফলে রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারণ, আমাদের শ্বাস গ্রহণের সঙ্গে বাতাসের মাধ্যমে অক্সিজেন ফুসফুসে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত অক্সিজেন নিয়ে শরীরের চাহিদা মেটায়।
বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন দরকার। বিশেষভাবে করোনাভাইরাস প্রথমেই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। তখন ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি থাকলে মহাবিপদ। এই অবস্থায় উপুড় হয়ে শুয়ে বুক ভরে শ্বাস নিতে হয়। একে বলে প্রোনিং। প্রোন পজিশনে শ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করলে অক্সিজেনের ঘাটতির আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
অন্তত করোনার এই দুঃসময়ে সবার প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম একান্ত প্রয়োজন। আমরা অনেক সময় মনে করি, কষ্ট করে ব্যায়াম করার দরকার কী, কিন্তু এটা ভুল ধারণা। এই সময়ে শ্বাস–প্রশ্বাসের ব্যায়ামই আসল। বুকভরে শ্বাস নিয়ে ছাড়তে হবে। উপুড় হয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ বুক ভরে শ্বাস নিলে বেশি উপকার। কারণ, আমাদের ফুসফুসের বেশির ভাগ অংশ রয়েছে পিঠের দিকে। তাই উপুড় হয়ে শুয়ে শ্বাস নিলে ফুসফুসের বেশির ভাগ বায়ুথলি সচল থাকে। এটা খুব দরকার। এর পাশাপাশি পায়ের গোঁড়ালি, হাঁটু, কোমর, ঘাড়, হাতের কবজি, কনুইসহ শরীরের সব অস্থিসন্ধির ব্যায়াম এবং শারীরিক শ্রমের ব্যায়াম করতে হবে।
করোনার রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থায় অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ডাক্তাররা প্রয়োজনে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি বিছানায় প্রোন অবস্থানে (উপুড় হয়ে শুয়ে) রেখে শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে বলেন। এতে ফুসফুস প্রচুর অক্সিজেন পায় এবং রোগীর রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। তবে এই অবস্থানে একটানা সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টার বেশি সময় রাখা হয় না। কারণ, সারাক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে শ্বাস–প্রশ্বাস নেওয়া কঠিন।
সুস্থ অবস্থায়ও আমাদের প্রোন অবস্থানে শুয়ে শ্বাস–প্রশ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা দরকার। রাতে ঘুমের সময় কিছুক্ষণ উপুড় হয়ে এবং বাকি সময় অন্তত পাশ ফিরে শোয়া দরকার। এতে ফুসফুস প্রচুর বাতাস ও সেই সঙ্গে অক্সিজেন পায়। পিঠে ভর দিয়ে না ঘুমানোই ভালো। কারণ, এতে পিঠের ভারে ফুসফুসে চাপ পড়ে এবং রক্ত পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।