জুমবাংলা ডেস্ক : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকা শহরে নৈরাজ্য চালানোর অভিযোগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশের জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। অপর দুজন হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয় আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরি এদিন আদেশ না দিয়ে আগামী ২০ নভেম্বর আদেশ দেয়ার জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে মামলার বাদী এবি সিদ্দিকী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। ওইদিন আদেশ না দিয়ে ৩১ অক্টোবর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সেন্টু মিয়া ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬) এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব (১৭) নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন এবং ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করেন।
বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে ছাত্র হত্যাকারী চালকের ফাঁসির দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি না চলা, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং হাফ ভাড়ার ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে ঢাকা শহরে বিক্ষোভ করেন। পরবর্তীতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এ আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলনকে রাজনীতিকরণসহ সারাদেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধানোর জন্য আসামি মির্জা ফখরুল, আমীর খসরু মাহমুদ ও রিজভী নির্দেশনা বা হুকুম দেন।
৪ আগস্ট (২০১৮) আসামি আমীর খসরু ঢাকা শহরসহ সারাদেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির লক্ষ্যে মোবাইলফোনের মাধ্যমে কুমিল্লার নওমী নামের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদলের কর্মীদের নামানো এবং ফেসবুকে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একটি অডিও ক্লিপ সে সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যেখানে শোনা যায়, কুমিল্লায় অবস্থানরত নওমী নামে এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। নওমীকে তিনি বলছেন, ঢাকা এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে।
অপরদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর হুকুমে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ছাত্রদলের লোকজন ঢুকে পড়ে। এছাড়া তাদের হুকুমে রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের কর্মীদের ঢুকিয়ে এনা পরিবহনের দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ, জিগাতলায় আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর এবং হামলা করে কর্মীদের আহত করা, মিরপুরে মারপিট, হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটায় ছাত্রদলের কর্মীরা।
ওইসব ঘটনায় ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম এইচ এম তোয়াহার আদালতে মামলাটি করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তেজগাঁও থানাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেন।
চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সেন্টু মিয়া একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, সিআর মামলাটি সার্বিক তদন্তে, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও দাখিল করা অডিও ভয়েস রেকর্ড এবং পত্রিকার কাটিং পার্যালোচনায় আসামিরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকা শহরে নৈরাজ্য চালায়।
জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নৈরাজ্য কাজে সম্পৃক্ত করতে উসকানি দেয়। যা পেনাল কোড (ফৌজদারি মামলার দণ্ডবিধি) ১৫৩/১০৯ ধারায় প্রাথমিকভাবে অপরাধ সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।