জুমবাংলা ডেস্ক: ফরিদপুর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে সদরের চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রাম। এই গ্রামে সিআইপি যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়িতে এবার ৫২ খণ্ডে ২৫০টি প্রতিমা নিয়ে ব্যতিক্রমী দুর্গাপূজার মহা আয়োজন করা হয়েছে। খবর ইউএনবি’র।
আয়োজকরা জানায়, এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৭৫০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হলেও ধোপাডাঙ্গা গ্রামের এই আয়োজনকে ঘিরে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এখানে সত্য, দ্বাপর, ত্রেতা ও কলি পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে এই চার যুগে ধারাধামে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে ভগবানের অংশ হিসেবে যে চারজন অবতার আবিভূর্ত হয়েছেন, সেই চার অবতার শ্রীহরি, রামচন্দ্র, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রী গৌরাঙ্গের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন মহাকাব্যের আলোকে তুলে ধরা হয়েছে ৫২টি খণ্ডের মাধ্যমে। এর মধ্যে সত্যযুগে শ্রীহরির নিদ্রা, ত্রেতা যুবে রামচন্দ্রের বিয়ে, বনবাস, সীতা হরণ, দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের কংসের কারাগারে জন্ম, জন্মের পর নন্দালয়ে গমন, নৌকা বিলাস এবং কলিযুগে জগাই-মাধাইর শিয্য হওয়া, নগর কীর্তন প্রভৃতি কাহিনী নিয়ে এই ৫২ খণ্ড তৈরি করা হয়েছে যাতে রয়েছে সর্বমোট ২৫০টি প্রতিমা।
প্রতিমাগুলো নির্মাণ করছেন মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার খাদুনা গ্রামের মৃৎ শিল্পী প্রলয় বিশ্বাস ওরফে হৃদয় (৩০)। গত ৭ জুন তিন লাখ টাকা চুক্তিতে তিনি এ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তার সাথে শিশির বিশ্বাস ও চয়ন বিশ্বাস নামে আরও দুই সহযোগী রয়েছে।
প্রলয় বিশ্বাস জানান, তিনি একজন মৃৎ শিল্পী তবে পাল পারিবারে তার জন্ম হয়নি। তিনি খুলনা চারু ও কারু কলা কলেজ থেকে মৃৎ শিল্প বিষয়ে পড়াশুনা করে শিল্পী হয়েছেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে চার অবতারের কর্মকাণ্ড নিয়ে ৫২ খণ্ডের এ আয়োজনের চিন্তা প্রলয় বিশ্বাসের মাথায় কিভাবে এলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ পড়াশুনা করে না, অতীত জানে না। নানা ধরনের অন্যায় কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে। ওই তরুণদের অতীত স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্যই এ আয়োজন তিনি করেছেন।’
তিনি বলেন, তার ধারণা ও বিশ্বাস এসব দেখে আজকের বিভ্রান্ত তরুণ সমাজ সঠিক পথে ফিরে আসার অনুপ্রেরণা পাবে।
এই পূজার আয়োজক যশোদা জীবন দেবনাথ জানান, দেবী দুর্গাসহ আড়াইশ প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি এই পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসবে।
সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসবকে ঘিরে ফরিদপুরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ বছর ফরিদপুরে ৭৬৫টি মণ্ডপ-মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে সকল প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। মন্দিরগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসারসহ মোবাইল টিম কাজ করবে। নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে পূজা মণ্ডপগুলোতে।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোরে মহালয়ার মধ্যে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসবের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর দেবী দুর্গার বোধন ও ৪ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে যা শেষ হবে আগামী ৮ অক্টোবর দশমীতে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।