জুমবাংলা ডেস্ক: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বে ‘সফলতার উদাহরণ’ হয়ে উঠতে পেরেছে; কিন্তু দেশের মানুষের চাহিদার তুলনায় তা এখনো অনেক কম। ২০০৮-০৯ সালে দেশে ফলের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি টন, আর এখন প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টন ফলের উৎপাদন হচ্ছে। গত ১২ বছরে ফলের উৎপাদন বেড়েছে ২২ শতাংশ।
১৬ জুন ‘জাতীয় ফল মেলা’ সামনে রেখে আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের ফল উৎপাদনের সার্বিক চিত্র তুরে ধরেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, একই সঙ্গে, বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হারের রেকর্ড বাংলাদেশের। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে বছরে সাড়ে ১১ শতাংশ হারে ফল উৎপাদন বাড়ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের সময়োপযোগী নীতি প্রণয়ন এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ফলে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ হ্রাস, জনসংখ্যার আধিক্য, জমিতে লবণাক্ততা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ আজ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি বলেন, কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয়, আমে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, পেঁপেতে ১৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। আর মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। নিত্যনতুন ফল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ সফলতা পেয়েছে। ২০ বছর আগে আম আর কাঁঠাল ছিল এই দেশের প্রধান ফল। এখন বাংলাদেশে ৭২ প্রজাতির ফলের চাষ হচ্ছে, আগে হতো ৫৬ প্রজাতির।
এতে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু দানাজাতীয় শস্য গ্রহণের পরিমাণ কমেছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাথাপিছু ফল গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এতে ফলের চাহিদা বেড়ে গেছে। ২০০৬ সালে মাথাপিছু ফল গ্রহণের হার ছিল ৫৫ গ্রাম যা বেড়ে ২০১৮ তে হয়েছে ৮৫ গ্রাম।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৮-০৯ সালে দেশে ফলের উৎপাদন ছিল প্রায় এক কোটি টন। আর বর্তমানে ফলের উৎপাদন হচ্ছে প্রায় এক কোটি ২২ লাখ টন। বিগত ১২ বছরে ফলের উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ।
রাজ্জাক বলেন, মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে ফল দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সেজন্য ফল উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশসম্মত নিরাপদ ফল উৎপাদনেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একমাত্র নিরাপদ ফলই আমাদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পারবে। ইতোমধ্যে এদেশের বিজ্ঞানীরা দেশে চাষোপযোগী ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতি ফলের ৬৫টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন।
দেশি ফলের পাশাপাশি বিদেশি ফলের চাষ আস্তে আস্তে বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের অনেক জায়গায় কাজুবাদাম ও কফি চাষের সম্প্রচারণ হচ্ছে।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট চত্বরে ১৬ থেকে ১৮ জুন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা ফল মেলা বসবে। মেলার এবারের প্রতিপাদ্য ‘বছরব্যাপী ফল চাষে, অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।