জুমবাংলা ডেস্ক : বহুল আলোচিত হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। ছেলের ফাঁসি হবে শুনে জ্ঞান হারিয়েছেন রিগ্যানের মা রোকেয়া বেগম (৪২)। বিলাপ করছেন তার স্বজনরাও।
রাকিবুল হাসান রিগ্যান বগুড়ার ইসলামপুর পশ্চিমপাড়ার মৃত রেজাউল হকের পুত্র। আজ বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণার পরপরই সরেজমিনে রিগ্যানে বাড়িতে গেলে এই চিত্র দেখা যায়।
এ সময় রিগ্যানের মা রোকেয়া বেগম চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘রিগ্যান নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।’
রিগ্যানের বোন জামাই আবু হোসেন বলেন, ‘রিগ্যান বগুড়া করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর শাহ সুলতান কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় তাবলিগে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সবার অজান্তে রিগ্যানকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় বাড়ির ভাড়াটিয়ার ছেলে সিহাব নামে এক সহপাঠী। এরপর থানা পুলিশ, র্যাব অফিস, ডিবি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে নিখোঁজের জিডি করেন। সম্ভাব্য সকল স্থানে রিগ্যানকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও বহু কষ্টে সিহাবের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দুপচাচিয়ায় তার বোন জামাইয়ের বাড়ি থেকে পুলিশে ধরে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সিহাব জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ নিরাপরাধ রিগ্যানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।’
তিনি বলেন, ‘রিগ্যানকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি আদায়ে পুলিশ তার ডান পায়ে গুলি করেও ব্যর্থ হয়েছে। আইনজীবির মাধ্যমে আদালতে রিগ্যান তার জবানবন্দিতে বলেছে সে নির্দোষ। জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গিরা তাকে জোর করে আটকে রেখেছিল। তাকে বের হতে দেওয়া হয়নি। মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছে। রিগ্যান নির্দোষ। এই রায় মানি না।’
রিগ্যানের বোন তানিয়া সুলতানা জানান, তারা দুই ভাইবোন। ছোটভাই রিগ্যান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তাদের মা রোকেয়া বেগম খাওয়া দাওয়া ছেড়েছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শারিরিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। শারিরিক অসুস্থতার কারণে মাকে তাদের বাড়িতে রেখেছেন। সবসময় কান্নাকাটি করেন। নির্দোষ ছেলে রক্ষা করতে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছেন। কোরআন তেলাওয়াত করছেন। নিরাপরাধ ছেলের মৃত্যূদণ্ডের আদেশ শোনার পর থেকে থেমে থেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ছেলের শোকে না জানি মাকে হারিয়ে ফেলি।
রিগ্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নিষিদ্ধ সত্তার সদস্য পদ গ্রহণ, সমর্থন, অর্থ গ্রহণ, হামলায় জড়িতদের প্রশিক্ষণ দিয়ে হত্যাকাণ্ডে সহায়তা ও প্ররোচিত করেছেন। এইচএসসি পাস রিগ্যান হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী জঙ্গিদের প্রশিক্ষক। বসুন্ধরার যে বাসা থেকে হামলাকারীরা হলি আর্টিজানের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন, সে বাসায় যাতায়াত ছিল। ২০১৪ সালে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে পড়ার সময় জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন। পরের বছর ঢাকায় চলে আসেন। মোট ছয়টি বাসায় ছিলেন। ২৭ জুলাই কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অভিযানে গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার হন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।