জুমবাংলা ডেস্ক: সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) ডিপার্টমেন্টের সাত শিক্ষার্থী তাদের কোর্সের প্রজেক্ট ওয়ার্কে উচ্চমানসম্পন্ন একটি রোবট বানিয়েছেন।
এটি তৈরিতে তাদের চার মাস সময় লেগেছে। আর রোবটটির নাম দেয়া হয়েছে ‘সেফটি অটোনমাস ফায়ার ফাইটার’, সংক্ষেপে সাফ-৭.০।
সাত শিক্ষার্থী রাতুল আহমেদ রাহাত, তুষার বনিক, মলয় দে, সামিমা আক্তার সুর্বণা, রামি তালুকদার, প্রিয়াঙ্কা তালুকদার ও মাহফুজ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত দল ‘এলইউ হান্টার’ রোবটটি তৈরি করতে সক্ষম হন।
রোবট তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন ওই বিভাগের দুই প্রভাষক মো. আশরাফুল ইসলাম ও মো. মুনতাসীর রশীদ।
রোবটটি বানানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ড থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা। মানুষের আকৃতির এই রোবটটিকে বাসা-বাড়ি, অফিস কিংবা কল-কারখানার আগুন নির্বাপনসহ অনেক কাজে ব্যবহার করা যাবে। রোবটটি ‘অটোনোমাস ও ম্যানুয়াল’ এই দুই প্রক্রিয়ায় কাজ করতে পারে বলে এটি যেকোন ধরনের আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে।
রোবটটিতে রয়েছে দুই ধরনের আলোক সংকেত-সবুজ ও লাল, যা অগ্নিকাণ্ডের ওপর নির্ভর দুই ধরনের বিপদ সতর্কীকরণ শব্দ হাই ও লো অ্যালার্ম বাজাতে পারবে।
এর পাশাপাশি ‘সাফ-৭.০’ রোবটটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেকোনো জায়গার গ্যাস বা ধোঁয়া নির্গমন শনাক্ত করে মেসেজ ও কলের মাধ্যমে যথাযথ কন্ট্রোল রুমে বার্তা পাঠাতে পারবে। এই রোবটটি একটি ‘অবস্ট্যাকেল এভয়েডিং রোবট’ যা তার চলতি পথে যেকোনো বাধা শনাক্তকরণের মাধ্যমে চলাফেরা করতে পারে। চলার পথে অথবা দূরে কোথাও আগুনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মাত্রই রোবটটি কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত করে আগুন নিভিয়ে দিতে পারবে।
রোবটটিতে আরও সংযুক্ত আছে, ক্যামেরার সাহায্যে আগুন নিভানোর পুরো প্রক্রিয়াটি যথাযথ কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। যদি কখনও রোবটটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে না পারে তবে বিকল্প উপায়ে এটি ‘ম্যানুয়াল’ প্রক্রিয়ায় ক্যামেরার সাহায্যে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে যথাযথ কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশনার মাধ্যমে পানি দ্বারা আগুন নেভানো সম্ভব হবে। রোবটটির আরও একটি বিশেষ দিক হলো এটি একটি আকর্ষণীয় ডিসপ্লের মাধ্যমে তার নিজের পরিচিতি প্রকাশ করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে ইইই ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান রুমেল এম এস রহমান পীর বলেন, ‘সাফ-৭.০’ রোবটটিকে আরও যুগোপযোগী করার অংশ হিসেবে এতে বোমা শনাক্তকরণ ও উদ্ধার, যেকোনো জায়গার তাপমাত্রা নির্ণয় এবং নিজস্ব সার্ভার ও অ্যাপসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।
শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ছাত্র-ছাত্রীদের এই রোবট প্রজেক্টের মান আরও উন্নয়নের মাধ্যমে বাজারজাত করতে পারলে আমাদের দেশের অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে ও উদ্ধার কাজে এটি ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি সব সময়ে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব প্রজেক্টে পৃষ্টপোষকতা করে উৎসাহ প্রদান করার জন্য লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, লিডিং ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা ইতিপূর্বে কয়েকবার দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ স্থান লাভ করেছে। ডিপার্টমেন্টের অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বর্তমানে স্কলারশিপ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষায় ও গবেষণা কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।