১৯৭০ সালের ঘটনা সেটা। কৈশোরে পা রাখার আগেই গ্রোবেলার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হন। এরপর তাকে বুশ যুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যেটা ছিলো রোডেশিয়ায় সাদাদের শাসনের বিপক্ষে এক বিপ্লব দমনের কাজ। এই যুদ্ধ শেষ হয় ১৯৮০ সালে এসে। রোডেশিয়া জিম্বাবুয়ে হয়ে যায়। আর সেখানে কালো সংখ্যাগুরুদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়।
জিম্বাবুয়ের ফুটবলার গ্রোবেলার যাত্রা শুরু করেছিলেন বুলাওয়ের এক ফুটবল ক্লাব থেকে। সেখান থেকে ডারবান সিটি দল হয়ে ভ্যাঙ্কুবার হোয়াইট ক্যাপস। আর এখান থেকেই এসে লিভারপুলের কিংবদন্তী হয়ে উঠলেন। লিভারপুলে ৪৪০টি ম্যাচ খেলেছেন ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে। এই সময়ে ক্লাবটির হয়ে ১৩টি বড় শিরোপা জিতেছেন তিনি।
কিন্তু এখনও তার জীবনের সবচেয়ে বড় অধ্যায় হয়ে আছে ওই যুদ্ধ। যুদ্ধের স্মৃতি যে মুছে যায় না, সেটা বলতে গিয়ে গ্রোবেলার বলছিলেন, আপনি যখন যুদ্ধ করে আসবেন, আপনি আর কখনোই আগের মানুষটি থাকবেন না। আপনাকে বাকিটা জীবন ওই যুদ্ধের পরিণতি নিয়েই কাটাতে হবে।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে গ্রোবেলার কথা বলেছেন সেই যুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে, কথা বলেছেন লিভারপুলে তার ক্যারিয়ার নিয়ে। গ্রোবেলার বলেন, ফুটবল আসলে তাকে এখান থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তাকে যুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে হয়নি। এরপর তিনি ফুটবলে এত ব্যস্ত সময় কাটাতে পেরেছেন যে, যুদ্ধ অনেকটাই পাশে চলে গেছে।
গ্রোবেলার বলছিলেন, তাকে যুদ্ধ নিয়ে হতাশার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি এই ফুটবলের জীবনের কারণে। বছরের পর বছর আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করেছি। আমাকে হতাশা বা অবসাদের ভেতর দিয়ে যেতে হয়নি। কারণ, ফুটবল আমার জীবন রক্ষা করেছিলো।
রোডেশিয়ার বুশ যুদ্ধে তিনি হারিয়েছেন বন্ধুদের, হারিয়েছেন সহযোদ্ধাদের। সবচেয়ে বড় কথা, নিজ হাতে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের গেরিলাকে। আর যুদ্ধের বিভৎস স্মৃতি কাটিয়ে উঠতে তার পাশে ক্রিকেট বা বেসবল নয়; সহায় হয়ে এসে দাঁড়িয়েছিলো ফুটবল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।