জুমবাংলা ডেস্ক: রংপুরের পীরগঞ্জে ফুলকপির বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। এই অঞ্চলের কৃষকরা ফুলকপির পাশাপাশি অন্যান্য সবজির আবাদও করে থাকেন। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় ফুলকপি চাষ করে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
জানা যায়, আশা করছেন এবছর আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো বীজ বপনের পাশাপাশি সুষম সার ব্যবহারের কারণে পীরগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়নে এবার ফুলকপির ফলন ভালো হয়েছে। এতে লাভের আশায় মুখিয়ে আছেন তারা। এলাকার উৎপাদিত ফুলকপি চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফুলকপির চাহিদা থাকায় বাজারদরও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষক নুরুল মিয়া বলেন, আমি প্রতি বছর ফুলকপির আবাদ করি। আল্লাহর রহমতে ফুলকপির ভালো আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন বেশি হয়েছে। তবে এবছর খরচের পরিমানও বেশি হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকলে লাভবান হতে পারবো।
চৈত্রকোল ইউনিয়নের ঝাড়বিশলা গ্রামের আরেক কৃষক আমির হামজা বলেন, ফুলকপি শুধু শীতকালেই নয়, এখন সারাবছর চাষ করা যায়। তবে শীতে ও তার আগ মুহুর্তে ফুলকপির বাজারদর ভালো থাকে।
তিনি আরো বলেন, আমি এবছর ১২ হাজার টাকা খরচ করে ২৫ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড ফুলকপির চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকলে লাভবান হবো। আশা করছি আগাম ফুলকপি বিক্রি করে আবার শীতকালীন ফুলকপির চাষ করতে পারবো।
পাঁচগাছি ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের কৃষক বুলু মিয়া বলেন, বর্তমানে এক একর জমিতে ফুলকপি চাষে খরচ হবে প্রায় ১ লাখ টাকা। তবে ফলন ও বাজারদর ভালো থাকলে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের কৈগাড়ী গ্রামের সবজি চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, এবার আগাম জাতের ফুলকপির আবাদ করেছি। সার ও সেচে খরচ বেশি পড়েছে। বিশেষ করে কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় ধকল গেছে। তবে এই সবজির ফলন ভালো হওয়াতে কোনো আপসোস নেই। এখন ফুলকপি বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছি। বাজার ভালো হওয়ায় সারের খরচ কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
এদিকে রংপুরের পাইকারি বাজারগুলোতে ফুলকপি প্রতি মণ ১০০০-১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি পাঁচ কেজি কেনা পড়ছে ২৫-২৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে এক কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা দরে।
কৃষকরা আরো জানান, স্থানীয় হাটবাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর এবং গাইবান্ধার বিভিন্ন হাটে ফুলকপির পাইকারদের কাছে তারা এই সবজি বিক্রি করেন। অনেকে আবার জমি থেকেই ফুলকপি নিয়ে যান। চাষাবাদে কষ্ট ও চাষে খরচ বেশি লাগলেও ভালো ফলন আর আশানুরূপ বাজারদর পাওয়ায় তারা খুশি।
পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছর প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রতিবছরই ফুলকপিসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির চাষ করে থাকেন। চাষিরা অত্যন্ত শ্রমজীবী। ফসল উৎপাদনে তাদের মধ্যে অলসতা নেই। তাই তারা সবজির ভালো ফলন পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন চাষিদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।