ইন্টারনেট জগতে কোন কিছুই পারফেক্টলি সেইফ না। সবচেয়ে বড় টেক কোম্পানিগুলোও হেক হয়। আমাদের মতো আমআদমিদের পারসোনাল ডাটা নিয়ে সমগ্র নেট দুনিয়ায়ই চলছে লুকোচুরি।
কয়েক মাস আগে হ্যাকাররা ফেসবুকের ‘ভিউ অ্যাজ’ ফিচারের নিরাপত্তা জাল কেটে প্রায় পাঁচ কোটি ফেসবুক একাউন্ট এর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল!
ফেসবুকে আইডি হ্যাক হওয়া এই ধরনের ঘটনা ইদানীং বার বার হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তা দিতে একাধিক নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তবে আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের উপরেও কিছু রয়েছে। তাই আজকে এ বিষয়ে কিছু টিপস দেওয়ার চেস্টা করবো।
আপনি যদি আপনার ফেসবুক একাউন্টে সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করেন বা মনে করেন আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে, তাহলে নিচের কাজগুলো অবশ্যই করবেন।
ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয়
১. ফেসবুকের লগইন ডিভাইস চেক করুন
কেউ আপনার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করেছে কিনা তা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, যে ডিভাইসগুলো থেকে আপনি ফেসবুকে লগইন করেছেন সেগুলো চেক করা।
আপনার ফেসবুক একাউন্টের সেটিংস অপশনে গিয়ে ‘সিকিউরিটি এন্ড লগইন’ পেজে ক্লিক করলে যে সব ডিভাইস থেকে আপনি ফেসবুক আইডিতে লগইন করেছিলেন, সেগুলোর তালিকা দিন-তারিখসহ দেখাবে।
কোনও অপরিচিত ডিভাইস থেকে আপনার অ্যাকাউন্ট লগইন করা হয়েছে এরকম দেখলে সাথে সাথে সেটি ‘রিমুভ’ বা ‘লগআউট’ করে দিবেন।
২. ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন
আপনার ফেসবুক একাউন্টের সেটিংস অপশনে গিয়ে ‘সিকিউরিটি এন্ড লগইন’ পেজে ক্লিক করলে যে সব ডিভাইস থেকে আপনি ফেসবুকে লগইন করেছিলেন সেগুলোর তালিকা দেখা যাবে।
কোনও অপরিচিত ডিভাইস থেকে আপনার অ্যাকাউন্ট লগইন করা হয়েছে দেখলে দেরি না করে পরিবর্তন করে ফেলুন আপনার ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড।
খেয়াল রাখবেন, আপনার নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডটির সঙ্গে যেন পুরনোটির কোনও মিল না থাকে এবং পাসওয়ার্ডটি শক্তিশালী করতে পাসওয়ার্ডে অক্ষর, বিশেষ ক্যারেক্টার এবং সংখ্যা ব্যবহার করবেন। এতে করে আপনার পাসওয়ার্ড বের করা কঠিন হয়ে পড়বে হ্যাকারদের জন্য।
৩. ফেসবুক একাউন্টে ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ চালু রাখুন
অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতো ফেসবুকেরও রয়েছে ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ বা দুই ধাপে তথ্য যাচাইয়ের পদ্ধতি।
এই পদ্ধতিতে লগইন করার জন্য শুধু পাসওয়ার্ডে কাজ হবে না, পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার মোবাইল ফোনে টেক্সট মেসেজে একটি কোড পাঠাবে ফেসবুক, ওই কোডটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করে আপনি ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবেন।
এই কোডটি যেহেতু আপনার ফোনে পাঠানো হচ্ছে, তাই কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জানলেও ঐ কোড ব্যতীত লগইন করতে পারবে না।
সুতরাং ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ পদ্ধতির সাহায্যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকারদের হাত থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত করা সম্ভব।
৪. ব্যক্তিগত তথ্য ‘অনলি মি’ করে রাখুন
আমাদের মধ্যে অনেকের ফেসবুকে নিজের সম্পর্কে অনেক তথ্য ‘পাবলিক’ করে রাখার অভ্যাস রয়েছে। যেমনঃ জন্মতারিখ ও সাল, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল। কিন্তু আমাদের এমটা করা ঠিক না।
কেননা আপনি যদি জন্মতারিখ, মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল ‘পাবলিক’ করে রাখেন, তাহলে অনেক সময় দেখা যায় হ্যাকার এই সকল তথ্য ব্যবহার করে খুব সহজেই ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিচ্ছে। তাই এই সকল তথ্য ‘অনলি মি’ করে রাখাই ভালো।
৫. আপনার ফেসবুক একাউন্টের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালে ফেসবুকের সাহায্য নিন
আপনি যদি আপনার ফেসবুক একাউন্টের উপর পরোপুরি নিয়ন্ত্রন হারান অর্থাৎ আপনার ফেসবুক আইডির নিয়ন্ত্রন যদি কোনো হ্যাকার নিয়ে নেয় বা আপনি আপনার আইডিতে লগইন করতে পারছেন না, তাহলে ফেসবুকের এই লিংকে গিয়ে তা ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
এই প্রক্রিয়ায় সহজেই একটি ফেসবুক আইডি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এখানে আপনাকে শুধু আপনার ফেসবুক একাউন্টের ইউজার নেম বা ফোন নাম্বার বা ইমেইল ও আপনার পুরাতন পাসওয়ার্ডটি ইন্টার করতে হবে এবং নির্দিষ্ট কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে। তাহলেই আপনি আপনার ফেসবুক আইডিটি পেয়ে যাবেন।
তো এই ছিলো ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় সম্পর্কিত কিছু বিষয়। আর্টিকেলে কোন রূপ ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অব্যশই কমেন্টে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।
তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।