আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি সাইটে কনটেন্ট প্রকাশ করে বাংলাদেশকে বিতর্কের মুখে ফেলে দেওয়া বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃত দম্পতির নাম বৃষ্টি ও আজিম। আটকের আগে বৃষ্টি ফেসবুক লাইভে এসে তার পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে আসার কারণ জানিয়েছিল।
ফেসবুক লাইভে বৃষ্টি বলেন, ওই আওয়ামী লীগ ছিল না কুত্তালীগ? আওয়ামী লীগকে আমি কুত্তালীগ বলব। কুত্তালীগের কারণে আমাদের লাইফটা পুরো ধ্বংস, আমরা জাহান্নামের রাস্তায় চলে গেছি।
লাইভে তিনি আরও বলেন, হ্যাঁ আমি খারাপ, আমি খারাপ একটা মানুষ। তবে খারাপ মানুষটার ব্যাপারে জানবেন আগে। মানুষটা কেনো খারাপ হয়েছে। কারণ, আপনাদের হেল্প পেয়ে আমি যেমন খারাপ হয়েছি, এখন যদি আবার সুন্দর কমেন্ট করেন বা আপনারা যদি আবার আগের মতো ভালোবাসেন তাহলে অবশ্যই আমি মনে করি ভালোর দিকে আবার আসতে পারবো।
বৃষ্টি ফেসবুক লাইভে বলেন, সবাই আমাকে খ্রিস্টান নামে চিনলেও আসলে আমি মুসলিম। তো একজন মুসলিম হয়ে কেনো আমি খারাপ রাস্তায় গেছি এটা শুধু ওই কুত্তালীগ, কুত্তালীগের জন্য। ওই হাসিনা আছে না, কি বলব মুখ দিয়ে অনেক খারাপ খারাপ গালি আসতেছিল। আবার হাসিনার আমলে পুলিশগুলো তো ছিল হাসিনার জামাই। হাসিনার মায়ের জামাই। সেটা হলো পুলিশের কাছে গিয়েও আমরা কোনো বিচার পায়নি।
আপনরা হয়তো এক সেকেন্ট এসে খারাপ কমেন্ট করতে পারেন, আমার বাপ-মা ধরে গালাগালি করতে পারেন কিন্তু আমার লাইফের পিছনে কেউই জানেন না। যেটা ক্যামেরার সামনে দেখেন ওটা আসলে মানুষের বাস্তব জীবন না।
আর আমি অন্যায় করছি ভালো হয়েছে, আমি আমার স্বামীর সঙ্গে করেছি অন্য কোনো মানুষের সঙ্গে না। তো এখন অনেকে বলতে পারেন হ্যাঁ আপনাদের টাকা খেয়ে ফেলছে অনেকে। ভালো কাজের জন্য দিয়েছেন খেয়ে ফেলছে। তো আপনরা চাইলে ভালোর দিকে যেতে পারতেন। অবশ্যই আমরা ভালোর দিকে চেষ্টার পর যখন দেখছি আমরা পারি নাই। তখন আমরা খারাপটা বেছে নিয়েছি।
গার্মেন্টসে আমি কাজ জানতাম না, আমি কাজ শিখছি। এক মাস কাজ শেখার পর আমাকে ওখান থেকে একটা সার্টিফিকেট দিয়েছিল। আমার ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি, আমার স্বামীর বাড়ি চট্রগ্রামে, আর চট্রগ্রামের আনোয়ারাই একটা ইপিজেট এর মধ্যে সব চেয়ে বড় গার্মেন্টস। এখানে আমি এক মাস কাজ শিখছিলাম। কাজ শেখার পরে একটা চাকরির জন্য যাই। ওখানে ২-৩ টা গার্মেন্টসে গিয়েছি কাজের জন্য। কিন্তু সবাই আমাকে কি অফর দেয় জানেন? সবাই আমাকে অন্য কিছুর অফার দেয়।
আমাদের জীবন কাহিনী শুনলে যে কেউ কান্না করে দিবেন। আমাদের তখন খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ ছিলো না। আত্মীয় স্বজনসহ কেউ আমাদের দুটা মানুষের খোঁজ নেওয়ার মতো কেউই ছিল না। এমনও সময় গেছে আমরা এক রাত একদিন খাবার না খেয়ে থেকেছি।
বৃষ্টি ও আজিম মাত্র ২৮ বছর বয়সেই পৌঁছে গেছেন বিশ্বের শীর্ষ পর্ন তারকাদের কাতারে—আর সেই কাজ করেছেন বাংলাদেশেই বসে। দেশের ভেতর থেকেই তারা গড়ে তুলেছিলেন একটি আন্তর্জাতিক পর্ন নেটওয়ার্ক, যা সম্প্রতি ফাঁস করেছে অনুসন্ধানী প্ল্যাটফর্ম ‘দ্য ডিসেন্ট’।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৭ মে প্রথম এডাল্ট ভিডিও আপলোড করেন বৃষ্টি ও আজিম। এরপর ১৭ মাসে তারা তৈরি করেন মোট ১১২টি কনটেন্ট, যা ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিশ্বের জনপ্রিয় পর্ন ওয়েবসাইটগুলোতে। এক বছরেই তাদের ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ছাড়ায় ২৬৭ মিলিয়ন।
আরও অবাক করা তথ্য হলো—এই পুরো সময়জুড়েই তারা বাংলাদেশে থেকেই এসব ভিডিও ধারণ করেছেন। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বৃষ্টি নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান মডেল’ হিসেবে। বর্তমানে তিনি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায় বিলাসবহুল জীবনের নানা চিত্র—নগদ টাকার স্তূপ, দামি গাড়ি ও মোটরবাইক, গাঁজা সেবনের দৃশ্য, এবং নিজেদের ভিডিওর প্রচারমূলক পোস্ট।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, ওই নারী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে ওই ঠিকানায় গেলে দেখা যায়, সেটি তার প্রথম স্বামীর বাড়ি, যিনি পেশায় একজন জেলে। তার শ্বশুর নিশ্চিত করেন যে, তিনি তার পুত্রবধূ ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।