বর্তমান যুগে ফেসবুক আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটি কেবল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং একাধিক ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক তথ্য আদান-প্রদানের স্বর্গদ্বার। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে তা সাইবার দুর্বৃত্তদের জন্যও লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। একটি সাধারণ সুরক্ষা ত্রুটি, একটি অতি সাধারণ পাসওয়ার্ডও হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় বিপদের কারণ। তাই আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে ফেসবুক হ্যাক ঠেকানোর উপায় অথবা নিরাপত্তা টিপস।
বিশ্বব্যাপী টেকনোলজি উন্নতির সাথে সঙ্গে ফেসবুক প্রায়ই হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। অনেক মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এটাই প্রমাণ করে, যে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করে ফেসবুক ব্যবহার করা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। যদি আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস রয়েছে যা অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক।
ফেসবুক হ্যাক ঠেকানোর উপায়: নিরাপত্তার মূল কৌশল
গ্রাহক হিসেবে, প্রথমে আপনার পাসওয়ার্ডের বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড আপনার অ্যাকাউন্টের প্রথম সুরক্ষা বিবাদ। একজন সাইবার বিশেষজ্ঞের মতে, একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড অন্তত আটটি অক্ষরের হওয়া উচিত এবং এতে অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত:
- পাসওয়ার্ডে বড় এবং ছোট হাতের অক্ষর ব্যবহার করা।
- বিশেষ চিহ্ন যেমন @, #, $, %, ইত্যাদি ব্যবহার করা।
- পাসওয়ার্ডে সহজে অনুমানযোগ্য তথ্য যেমন জন্মদিন বা নাম ব্যবহার না করা।
এটা মনে রাখবেন যে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের জন্য একটি শক্তিশালী, ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা জরুরি।
পুলিশি নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধিত হওয়া
একটি আকর্ষণীয় নিরাপত্তা বিকল্প হল আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুই-ফ্যাক্টর প্রমাণীকরণ সক্রিয় করা। এটি আপনাকে একটি অতিরিক্ত স্তরের সুরক্ষা প্রদান করে যা আপনার পাসওয়ার্ড ছাড়া অ্যাক্সেস পাওয়া কঠিন করে তোলে। এই বিকল্পটি শুধু পাসওয়ার্ডের উপর নির্ভর না করে, বরং রেজিস্টার করা মোবাইল ফোনে চলমান একটি কোডের মাধ্যমে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করে।
এটি সক্রিয় করলে, যখনই আপনি নতুন একটি ডিভাইস থেকে লগ ইন করবেন, তখন আপনার ফোনে একটি কোড পাঠানো হবে যা আপনাকে প্রবেশ করতে হবে। এটি ফেসবুক হ্যাক ঠেকানোর একটি কার্যকরী উপায়।
শত্রুরা কারা?
আমাদের সাইটে যখন লোগইন করতে হয়, তখন আমরা সবসময় সতর্ক থাকতে পারি না। সাইবার অপরাধীরা প্রায়ই রয়্যালটি অনলাইনে বা মেসেজের মাধ্যমে আমাদেরকে ফাঁসে ফেলার চেষ্টা করে। ডক্টর ওয়েন স্টেফেন একটি রিসার্চে দেখিয়েছেন যে প্রায় ৮০% মানুষ যারা ফেসবুকে সক্রিয়, তারা হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। তাই আপনার উচিত সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক না করা এবং অযাচিত বার্তা খুলতে না করা।
ফেসবুক হ্যাক করার প্রচলিত পদ্ধতি
বর্তমানে ফেসবুক হ্যাক করার প্রচলিত দুইটি পদ্ধতি হচ্ছে ফিশিং এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। ফিশিংয়ের মাধ্যমে অজানা লিঙ্কে ক্লিক করে অনেকেই তাদের তথ্য শেয়ার করতে বাধ্য হয় এবং এর ফলে সাইবার অপরাধীরা সহজেই তাদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে। সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে একজন হ্যাকার আপনার টার্গেট তথ্য জানতে পারে অথবা অন্যদের মাধ্যমে আপনার উপর আক্রমণ করতে পারে।
অতএব, পুরস্কৃত তদন্তের ভারসাম্য বজায় রাখতে সচেতন থাকুন এবং আপনার পরিচয় ব্যক্তিগত রাখুন।
আপনার যন্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
শুধু ফেসবুকেই নয়, আপনার সমস্ত যন্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের সফটওয়্যার আপডেট রাখুন, কারণ এটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে।
এছাড়া শক্তিশালী এন্টিভাইরাস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি সাইবার আক্রমণের থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। ফোনের সেটিংসে প্রতিটি অ্যাপের অনুমতি পরীক্ষা করুন যাতে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলির দ্বারা আপনার তথ্য হাতিয়ার না হয়।
বন্ধুর প্রোফাইল থেকে সুরক্ষা বাড়ানো
আপনার বন্ধুদের প্রোফাইল থেকেও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন। একটি সাধারণ ভুলের মাধ্যমে, আপনার বন্ধুরা অপরিচিত লিঙ্কের উপর ক্লিক করে ফেসবুকে একটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, আপনার বন্ধু এবং স্বজনদের শনাক্ত করতে সক্ষম হতে হবে। যদি তারা আক্রান্ত হয়, তবে তাদের সতর্ক করা উচিত।
কাঠামো প্রস্তুতি এবং পুনরুদ্ধার
যদি আপনি মনে করেন আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে, অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
- প্রথমে, আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
- যদি পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা সম্ভব না হয়, তবে ফেসবুকের ‘মোশন’ কিন্তু ‘সাবমিট’ করুন।
- আপনার ইমেইলে ফেসবুকের কাছ থেকে আত্তীকৃত বার্তা পর্যালোচনা করুন।
- যদি অবিলম্বে সেই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ না পান তবে, পাহারাদার পদ্ধতি অক্ষরে পোশাকের মতো বিবেচনা করতে হবে।
উপসংহার:
আমরা সবাই জানি, প্রযুক্তি জগত একটি ডাব্লু বহন করে। কিন্তু আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষার খোঁজে ঠেকে থাকলে, আপনার পদক্ষেপগুলি তাৎক্ষণিকভাবে আপনাকে সুরক্ষা দিতে পারে। সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন, এবং আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ফেসবুক হ্যাক ঠেকানোর উপায় সহজ নয়, কিন্তু যদি আপনি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তবে এটি সম্ভব।
জীবনের নিরাপত্তার জন্য সর্বদা গুরত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হিসাবে ফেসবুকে প্রবেশ করুন এবং একটি সতর্ক ব্যবহারকারী হিসেবে জীবন কাটান।
জানুন
ফেসবুক হ্যাক শুরু হলে কি করবেন?
যদি সন্দেহ করেন যে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে, অবিলম্বে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন এবং ফেসবুকের “Help Center” এ যান।
কি করে জানবেন আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ?
নিরাপত্তা সেটিংস চেক করুন এবং দুটি স্তরের প্রমাণীকরণ ব্যবহার করুন।
আমি কি ফেসবুক পাতার আগ্রহ হারাতে পারবো?
হ্যাঁ, আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করতে বা পেজ অপসারণ করতে পারেন।
সাম্প্রতিক অন্যান্য হ্যাকিং ঘটনার দিকে নজর রাখেন কি?
হ্যাঁ, কোনও বড় হ্যাকের সময় মিডিয়া রিপোর্ট ও অনলাইন সাইবার সিকিউরিটি ফোরামে নজর রাখা উচিত।
বন্ধুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যদি হ্যাক হয়ে যায় কি করবেন?
তৎক্ষণাৎ তাদের সতর্ক করুন এবং নিরাপত্তা পাসওয়ার্ড পরিবর্তনে সহায়তা করুন।
আপনার প্রিয় ফেসবুক সুরক্ষা টিপস কি কি?
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং দুটি স্তরের প্রমাণীকরণ সর্বদা ব্যবহার করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।