এই সময়টায় দাঁড়িয়ে মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করলেও ক্ষতি নেই। তবে ল্যাপটপ মুঠোফোনের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করলে গতি নেই। ঘরের কাজে, বাইরের কাজে প্রয়োজনে-আয়োজনে এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে মোবাইল-ল্যাপটপ না হলে চলেই না। তবে মানুষে-প্রযুক্তিতে এই বন্ধুত্বের মাঝে অদৃশ্য শত্রু হলো এক প্রকার নীল আলো। সোজা কথায় মোবাইল-ল্যাপটপ থেকে নির্গত ব্লু লাইটের কথা বলছি।
নানাবিধ ক্ষতি করলেও ব্যবহারকারীর চোখের দিকেই যেন বেশি আক্রোশ ব্লু লাইটের। এর প্রভাবে মোবাইল-ল্যাপটপে বসে থাকাদের চোখে ছানি পড়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন, পাওয়ার বাড়ার মতো সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে দিনের দীর্ঘ সময় মোবাইল, ল্যাপটপে বসে থাকা বিভিন্ন বয়সীদের এসব জটিলতায় ভোগার আশঙ্কা বেশি। ব্যবহারকারীদের ওপর নীল আলোর অত্যাচার এখানেই শেষ নয়। অনিদ্রা, অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারসহ বিভিন্ন অসুবিধা হতে পারে।
এদিকে মোবাইল-ল্যাপটপ যেখানে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে অনেকেই ভাবতে পারেন, ব্লু লাইটের ক্ষতি মেনে নিয়েই চলতে হবে। ধারণাটি একেবারেই ভ্রান্ত। কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলেই ক্ষতিকর এই নীল রশ্মির প্রকোপ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায়। একটানা ২০ মিনিটের বেশি মোবাইল ও কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। ২০ মিনিট পর পর চোখ সরিয়ে দূরে ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। এতে চোখ কাছের ও দূরের দৃশ্য দেখার মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে।
চোখের সামনে মোবাইল ধরে রেখে ঘুমাতে যাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য এটি ভীষণ রকম ক্ষতিকর। ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যারা ল্যাপটপ-কম্পিউটারের সামনে বসে থাকেন তাদের জন্য এই সতর্কবার্তা প্রযোজ্য। কেননা এতে অনিদ্রা পেয়ে বসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর তিন ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও টিভির সঙ্গে চোখের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। তবে ডিভাইস নির্ভর এই সময়ে এটি যেন একেবারেই অসম্ভব। তাই ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল-কম্পিউটারের সামনে থেকে দূরে যেতে পারেন।
ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে নিরাপদে থাকতে একটি বিশেষ ধরনের চশমা ব্যবহার করতে পারেন। যা কম্পিউটার গ্লাস নামে পরিচিত। অফিসে বা বাসায় এই চশমা পরে কম্পিউটারের সামনে বসুন। এতে নীল আলো চোখে প্রবেশে বাধা পাবে। যাতে করে চোখ থাকবে সুস্থ। ব্লু লাইটের প্রভাবে ডিজিটাল আই স্ক্যান নামে যে রোগের প্রভাব বাড়ছে সেটি থেকে মুক্ত থাকবেন। প্রযুক্তি-নির্ভর এই সময়ে যেহেতু মোবাইল বা কম্পিউটার বন্ধ করা শতভাগ অসম্ভব সেখানে প্রতিরক্ষার দিকটি মজবুত করেই ডিভাইসগুলো ব্যবহার করতে হবে।
এজন্য মোবাইল, কম্পিউটারের স্ক্রিনে ব্যবহার করতে পারেন ফিল্টার। এ ছাড়া নাইট মোড অন করে রাখতে পারেন মুঠোফোন বা কম্পিউটারে। নাইট মোড অন রাখলে ব্লু লাইট কম নির্গত হয়। একই সঙ্গে নাইট মোডের কারণে দুচোখে ঘুম নেমে আসতেও তেমন একটা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।