জুমবাংলা ডেস্ক: চুরির মামলার আসামি হয়ে ৭ বছর আগে দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পাড়ি জমান নাসির। এরপর সেখানে বসেই চলে চুরির পরিকল্পনা। পরিকল্পনা তো নয় যেন এক মহাপরিকল্পনা।
সে অনুযায়ী দেশে থাকা চক্রের মাধ্যমে চুরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়।
সর্বশেষ নাইটগার্ড ও সুইপার নিয়োগের নামে চোর চক্রের দুই সদস্যকে রাজধানীর কচুক্ষেতে রজনীগন্ধা মার্কেটে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুযোগ বুঝে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মার্কেটের রাঙ্গাপরী জুয়েলার্সের দোকানের তালা ভেঙে চুরি করে তারা।
এ ঘটনায় শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর ও মুন্সিঞ্জে অভিযান চালিয়ে মঞ্জুরুল আহসান শামীম (৩৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ সময় চোরাই স্বর্ণ বিক্রির সাড়ে ৯ লাখ টাকা ও ইমিটেশনের গহনা উদ্ধার করা হয়।
রবিবার(২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ভাষানটেক থানাধীন পুরাতন কচুক্ষেতের রজনীগন্ধা টাওয়ারের নিচতলার রাঙ্গাপরী জুয়েলার্স থেকে আনুমানিক ৩০০ ভরি স্বর্ণ, ইমিটেশনের গহনা ও নগদ অর্থ চুরি হয়। বিষয়টি তদন্তের ধারাবাহিকতায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার শামীমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, এই চোর চক্রের দুই সদস্য মাসুদ ও ইলিয়াস মিথ্যা নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে মার্কেটে নিরাপত্তা কর্মী ও সুইপারের চাকরি নেয়। এ সময় তারা ওই দোকানে চুরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চক্রের অন্যান্য সদস্যের তথ্য দেয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার আগের দিন চক্রের অন্য এক সদস্য শাহীন মাস্টার মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া করে। মালামাল তোলার নাম করে টেবিলের বক্সে করে কৌশলে তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি মার্কেটে ঢুকায়।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক রাত ১টার দিকে চক্রের আরও ২ সদস্য শ্রীকান্ত ও তালা ভাঙার মিস্ত্রী রাজা মিয়া মার্কেটে ঢুকে মাসুদ ও ইলিয়াসসহ চুরি করে ভোর ৫টার দিকে বের হয়ে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার ভাড়া বাসায় যায়।
সেখানে শাহীন মাস্টার ও গ্রেফতার মঞ্জুরুল হাসান শামীম সব সদস্যের উপস্থিতিতে প্রকৃত স্বর্ণ, ইমিটেশন গহনা ও নগদ অর্থ আলাদা করে। আনুনানিক ১০টার দিকে শ্রীকান্ত চোরাইকৃত স্বর্ণ তার পূর্ব পরিচিত এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, স্বর্ণ বিক্রির টাকা নিয়ে পুনরায় ভাড়া বাসায় ফিরে আসে সে। এরপর টাকা ইমিটেশন গয়না নিজেদের মধ্যে ভাগ করে যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যায়।
তিনি বলেন, চক্রের মূল হোতা ফ্রান্স প্রবাসী নাসিরের (৫০) বাড়ি বাগেরহাটে। সে শামীমের মাধ্যমে চুরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থের যোগানও দিত সে। ইতোপূর্বে চক্রের সদস্যরা ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় একাধিক চুরি করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুরি মামলার আসামি নাসির সাত বছর আগে দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পাড়ি জমায়। দেশ ছাড়ার আগে ২০ বছর ধরে সে চুরির ঘটনায় জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে কতোগুলো মামলা রয়েছে সেই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। চক্রের পলাতক অন্য জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।