জুমবাংলা ডেস্ক : ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম নিয়ে বিরোধের জেরে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবির হোসেনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান। আজ বুধবার দপুর ২টায় তার কার্যালয়ে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
ওসি বলেন, মুজাহিদ, হামিম ও আবির তিনজন পরস্পর আত্মীয় হওয়ার কারণে তারা এক সঙ্গে খেলাধুলা করত। মোবাইল ফোনে সাধারণ গেম খেলতে খেলতে এক পর্যায় ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে তারা।
কয়েক সপ্তাহ আগে মুজাহিদের কাছ থেকে আবির হোসেন ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমে অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে সেটি পরিবর্তন করে। ওই অ্যাকাউন্টে মুজাহিদের ৫০ হাজার টাকা রয়েছে দাবি করে আবির হোসেনের কাছে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমে অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড অথবা টাকা ফেরত চায় মুজাহিদ। কিন্তু আবির হোসেন আইডি ও পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় বিরোধ শুরু হয়।
ওসি বলেন, ঘটনার দিন ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুহুনবীর ছেলে হামিমকে সঙ্গে নিয়ে মিরাজ উদ্দিনের ছেলে মুজাহিদ আবির হোসেনকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে হামিমের বেল্ট খুলে আবিরে গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর পাটের আঁশ দিয়ে বেঁধে ফেলে রাখার পর আবিরের কাছে থাকা তার মায়ের মোবাইল ফোন থেকে মুজাহিদ আবিরে বাবার কাছে হিন্দি ভাষায় ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
পরে আবিরের বাবা বিষয়টি আবিরের মা রোজিনাসহ স্বজনদের জানান। স্বজনারা আবিরকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করার পাশাপাশি ৯৯৯-এ কল দেয়। ফোন কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর মুজাহিদ ও হামিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায় হত্যার ঘটনা স্বীকার করে মরদেহের সন্ধান দিলে উদ্ধর করা হয়।
ওসি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিশু আবির হোসেনের মা রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে মুজাহিদ ও হামিমের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলার আসামিরা মেহেরপুর আদালতে হত্যাকাণ্ডের দ্বায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশে আসামিদের বয়স ১৪ ও ১৫ বছর হওয়ার কারণে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে।
এ বিষয়ে মিকুশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক জানান, মুজাহিদ অষ্টম ও হামিম ষষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। করোনা সংক্রামণের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমসহ নানা অপরাধে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দিবাগত রাতে মিনাপাড়া-মানিকদিয়া মাঠের একটি পাট খেত থেকে আবিরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ও মিনাপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আসাদুল হকের ছেলে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।