বইছে বসন্ত বাতাস, মুকুলে ছেঁয়েছে আমগাছ

রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : গতকাল ছিল পহেলা ফাল্গুন। বাংলা বর্ষপঞ্জির একাদশতম মাস ও ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। প্রকৃতি খুলে দিয়েছে তার সৌন্দর্যের দুয়ার। বইতে শুরু করেছে বসন্ত বাতাস। আমগাছ ছেঁয়ে যাচ্ছে মুকুলে। কবিগুরুর সুরে বলাই যায়, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।’

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডুমুরগাছা গ্রামের একেবারে দক্ষিণে বিঘাখানিকের বেশি জায়গাজুড়ে শামসুল আলমের পুকুর। এর পাড়জুড়ে সারি সারি আমগাছ। এর বেশির ভাগ গাছেই দেখা দিয়েছে মুকুল।

শামসুল বলেন, কয়েক বছর আগে পুকুরের পাড়জুড়ে গাছগুলো লাগিয়েছেন। প্রতিবারই মাঘের শেষে আমের মুকুলে গাছ ছেঁয়ে যায়। এবারও তা-ই শুরু হয়েছে। গাছে গাছে আমের মুকুল দোল খেতে দেখলে ভালোও লাগে।

পুকুরপাড়ের পাশে দাঁড়িয়ে যখন শামসুলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন কোথায় যেন এক দুষ্ট কোকিল কুহু কুহু ডেকে লুকিয়ে গেল গাছের আড়ালে। কিছুক্ষণ খুঁজেও তার আর হদিস পাওয়া গেল না।

তবে কোকিলের দেখা কালেভদ্রেই পাওয়া যাচ্ছে বলে জানালেন প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী কবির হোসাইন। চাকরিসূত্রে পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের বাসিন্দা এই তরুণ কবির বাড়ি টাঙ্গাইল। তিনি জানালেন, বসন্তের ঠিক আগমুহূর্তের সময়টাই দারুণ লাগে। এ সময় মন যেন কেমন উচাটন হয়ে পড়ে। কান যেন কোকিলের কণ্ঠ শুনতে চায়। হঠাৎ হঠাৎ এক পরভৃতের কণ্ঠ শুনলে মনে অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়।

একই উপজেলার মহেশপুর এলাকার বাসিন্দা শাহওয়াজ কবিরের আবার ভালো লাগছে এখনকার বসন্ত বাতাস। সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষক বলেন, এখন হঠাৎ কোথায় থেকে এলোমেলো দমকা বাতাস এসে মনটাও খানিকটা এলোমেলো করে দিচ্ছে। হঠাৎই এমন বাতাস এসে গায়ে লাগলে হালকা শীত অনুভূত হলেও তা আরামদায়ক স্পর্শ দিচ্ছে। মনে হয়, কোথাও না গিয়ে এই বসন্ত বাতাস খানিকটা গায়ে মাখি।

ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেন থাকেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীরবাজার এলাকায়। এখানকার ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে আছেন তিনি। তিনি বললেন, দিনাজপুরে বেশ কিছু আমবাগান আছে। সেসব বাগান এখন মুকুলে ছেঁয়ে যাচ্ছে। এসব মুকুলের যেমন অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে, তেমনি এগুলো প্রকৃতির শোভা ও সৌন্দর্যের প্রতীকও। মাঘের শেষে এই আমের বোলই হয়ত রবী ঠাকুরকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।’

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরল দৃষ্টান্ত