নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে লেখক অসীম হিমেলের তেইল্লাচোরা ও সাতপুরুষে খেদু মিয়া নামের দুটি বই। ১৫২ পৃষ্ঠার তেইল্লাচোরা উপন্যাসটি আজব প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এটির প্রচ্ছদ করেছেন সারাজাত সৌম। বইমেলায় ৩৯২ ও ৩৯৩নং স্টলে পাওয়া যাবে। মূল্য ৩৮০ টাকা। এছাড়া ২০৮ পৃষ্ঠার সাতপুরুষে খেদু মিয়া উপন্যাসটি অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এটির প্রচ্ছদ করেছেন চন্দন ত্রিমাত্রা। বইমেলায় ১০নং প্যাভিলিনে পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য ৫৮০ টাকা।
মেলা প্রাঙ্গনে ২৫% মূল্য হ্রাসে বই দুটি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও রকমারি ডটকমে অর্ডার করে দেওয়া হচ্ছে ২৫% ডিসকাউন্টে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বই দুটি সংগ্রহ করা যাবে। এর আগে, একই লেখকের ৬টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।
তেইল্লাচোরা উপন্যাসটি নিয়ে আসীম হিমেল বলেন, প্রতিটা মানুষের ভেতরেই দ্বৈত সত্তা ব্যাস করে। মানুষের এই দ্বৈত সত্তার কারণে কখনও সে থাকে রাগী কখনও থাকে বিনয়ী। মানুষ প্রয়োজনে রাগবে আবার প্রয়োজনে বিনয় দেখাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সমাজে কিছু মানুষ থাকে যাদের উপরে ভালো মানুষের মুখোশ থাকলেও ভেতরে বাস করে এক খারাপ মানুষ। এরা মানুষের ক্ষতি করার জন্যই বেঁচে থাকে। অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না, নিজেরটা সবচেয়ে ভালো বোঝে। এই গল্পে রহিজ তেমন একজন খারাপ মানুষ যে নিজের বাপকেও ছাড়ে না। খারাপ কাজ করতে করতে একসময় তার মাথার ভেতর ঢুকে যায় এক তেলাপোকা সত্তা। তেলাপোকার সাথে কথা বলা শুরু করে সে। কাছের বন্ধু হয়ে যায় তারা। রহিজ জীবনের অনেক মানে, ভালো-মন্দ জানতে ও বুঝতে পারে এই তেলাপোকার মাধ্যমে। তেলাপোকা যেমন টিকে আছে যুগ যুগ ধরে তেমনি খারাপ মানুষও টিকে টিকে আছে যুগ যুগ ধরে। এরকম একজন অতি খারাপ মানুষের গল্প তেইল্লাচোরা….
খেদু মিয়া সিরিজের আলাদা আলাদা গল্পের তৃতীয় উপন্যাস সাতপুরুষে খেদু মিয়া নিয়ে লেখক বলেন, ফরেনসিক মেডিসিনের অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর হয়েও খেদু মিয়াকে জড়িয়ে যেতে হয় বিভিন্ন প্যারানরমনাল অ্যাক্টিভিটির সাথে।
সায়েন্স, যুক্তি, আবেগ, প্রচলিত প্রথা সব মিলিয়ে সফল সমাধানের চেষ্টা করেণ তিনি।
জন্মের পর থেকেই অদৃশ্য কারও সাথে কথা বলে দীপা ও রাতুলের একমাত্র সন্তান রেহান । জটাধারী সাধুবাবার মতে, রেহানের ওপর পড়েছে পূর্বপুরুষের বদনজর। এটা কাটাতে এক রাত থাকতে হবে রাতুলের পৈতৃক ভিটায়।
গ্রামের বাড়িতে রাত কাটাতে গিয়ে পূর্বপুরুষদের স্বপ্নে দেখে সম্পূর্ণ বদলে যায় সয়েন্টিস্ট রাতুল। বিদেশের চাকুরি ফেলে হয়ে যায় গ্রামের এক বৈষয়িক মানুষ। সাত পুরুষের সম্পত্তি উদ্ধার করতে গিয়ে শিকার হয় নোংরা এক ভিলেজ পলিটিক্সের। অন্যদিকে মেডিকেলের ভাষায় ফিভার অব আননোন অরিজিনে ভুগতে থাকে রেহান। গ্রামের এক পুরোহিতের মতে জ্বরাসুর নামক অপদেবতার কবলে পড়েছে সে। জ্বর সারাতে রেহানের পূর্ব পুরুষের রক্ত দিয়ে কঠিন এক পূজা করে এই অপদেবতাকে তুষ্ট করতে হবে দীপাকে।
এ পরিবারকে সাহায্য করতে গিয়ে খেদুমিয়া দেখতে পান, পূজা অর্চনাকে সামনে রেখে রাতুলের পরিবারকে ধ্বংসের এক ভয়ংকর জাল পেতেছেন গ্রামের কিছু স্বার্থনেষী মানুষ। এ জাল ছিন্ন করতে গিয়ে তিনি নিজেও পড়েন জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে।
একই সূত্রে গাঁথা শ্বাসরুদ্ধকর রহস্যের এক নরমাল ও প্যারানরমাল সমান্তরাল কাহিনি নিয়ে সাত পুরুষে খেদু মিয়া।
অসীম হিমেল ৫ নভেম্বর গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন অর্থোপেডিক সার্জন। বর্তমানে বিসিএস (স্বাস্থ্য) এই কর্মকর্তা জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), পঙ্গু হাসপাতালে কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত। হাড়-ভাঙা-জোড়া দেওয়ার পাশাপাশি লেখালেখির চর্চা চলছে সমান্তরালে। সাহিত্যের পাতায় লিখে যাচ্ছেন গল্প, উপন্যাস। মধ্যরাতের অভিযান’ নামক কিশোর উপন্যাস দিয়ে যাত্রা শুরু করে একে একে লিখেছেন ‘জোছনায় নীল আকাশ’, ‘খেদুমিয়া’, ভাওয়াল উপাখ্যান ‘মেজোকুমার এক সন্ন্যাসী রাজা’, ‘দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার’ ও ‘ধুম্রজালে খেদুমিয়া’। প্রতিটি গল্প, উপন্যাস পেয়েছে পাঠকপ্রিয়তা। আর এই বইমেলায় প্রকাশ পেলো ‘তেইল্লাচোরা’ ও ‘সাতপুরুষে খেদুমিয়া’ শীর্ষক দুইটি উপন্যাস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।