জুমবাংলা ডেস্ক: শোকের মাসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছে। জাতীয় শোক দিবস যতই এগিয়ে আসছে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে মানুষের ভিড় ততই বড়ছে। বিশেষ করে ছুটির দিল গুলোতে বুকে শোকের চিহৃ কালো ব্যাজ ধারণ করে হাজার হাজার মানুষ আসছেন টুঙ্গিপাড়ায়। তারা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু ও ৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করছেন দর্শনার্থীরা। বঙ্গবন্ধুর জন্য শোকাশ্রুপাত করছেন তারা।
পদ্মা সেতু চালুর পর এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এ কারণে প্রতিদিনই পদ্মাসেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ টুঙ্গিপাড়া আসছেন। এছাড়া রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষ টুঙ্গিপাড়া এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শোকাবহ আগস্টের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা নওয়াব আলী বলেন, শোকের মাসের প্রথম দিন থেকেই মন্ত্রী, এমপি, সচিব, পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী সংগঠন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ টুঙ্গিপাড়া আসছেন। প্রতিদিন গড়ে ১ শ’ সংগঠন এখানে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ। পদ্মা সেতু চালুর পর এ বছর শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে মানুষের সমাগম বেশি লক্ষ্যকরা যাচ্ছে। শোকার্ত মানুষের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধায় এখানে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা শেখ সায়েরা খাতুন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের প্রিয় খোকা। ছোট বেলা থেকেই তিনি শোষিত নির্যাতিত মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি নিজেকে নিয়ে কখনও চিন্তা করেননি। মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তাকে জেল, জুলুম, হুলিয়া ও শাসক গোষ্ঠীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আপসহীন খোকা সবার প্রিয় মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু। আর বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়েছেন।
৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকার বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। নিথর দেহ নিয়ে মৃত্যুহীন বঙ্গবন্ধু ফিরে আসেন টুঙ্গিপাড়ার প্রিয় মাটিতে। এখানেই পিতা-মাতার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর ৪৭ বছর পর প্রমাণিত হয়েছে জীবিত বঙ্গবন্ধু থেকে মৃত বঙ্গবন্ধু বেশি শক্তিশালী । তাই তার সমাধিতে শোকের মাসে মানুষের ঢল নেমেছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ বলেন, ঘাতকা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে প্রত্যন্ত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় তাকে কবর দিয়েছিলো। তারা ভেবেছিল এ নিভৃত্যপল্লীতে কেউ বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করতে আসবে না। তাদের সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স করেছেন। এ সমাধিসৌধ টুঙ্গিপাড়াকে নবআলোকে উদ্ভাসিত করেছে। । বঙ্গবন্ধুর মহিমায় টুঙ্গিপাড়া জেগেছে।
দর্শনার্থী ভোলা শহরের নূর কুতুব (২৫) বলেন, শোকের মাসে এ প্রথম আমি টুঙ্গিপাড়া এসেছি। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। তার জন্য দোয়া মোনাজাত করেছি। এখানে এসে ৭৫ এর ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনা জানতে পেরেছি। এ ঘটনা আমার বিবেককে নাড়া দিয়েছে। শোকের মাসে ৭৫ এর ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের প্রেক্ষাপট নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় স্থির চিত্র ও ধারা বর্ননার ব্যবস্থা রাখলে ভালো হয়। এতে আমাদের মতো নতুন প্রজন্মের মানুষ ১৫ আগস্ট সম্পর্কে জানতে পারবে। দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর এ আত্মত্যাগ আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।