জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর বনানীতে এক চীনা নাগরিককে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বনানীর এ ব্লকের ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর বাসা থেকে মাটি খুঁড়ে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশের মাথার চুল ও দুই পায়ের গোড়ালি মাটির বাইরে বেরিয়ে ছিল। নিহত গাউ জিয়াং হুই (৪৭) ঐ বাসারই ৬ষ্ঠ তলার ৬-বি নম্বর ফ্ল্যাটে থাকতেন। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। নিহত চীনা নাগরিক পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশে চীন থেকে কাপড় আমদানি করতেন। এ ঘটনায় নিহতের গাড়িচালক সুলতান ও তিন নিরাপত্তাকর্মীসহ ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার মাটির তলায় লাশ পুঁতে রাখার খবর পেয়ে বনানী থানা পুলিশ সেখানে যায় এবং দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লাশটি মাটি খুঁড়ে তোলা হয়। ছয়তলা বাড়িটির মালিক একজন আইনজীবী। নিহত ব্যক্তি ঢাকায় একাই থাকতেন। চীন থেকে মাঝে-মধ্যে তার স্ত্রী-সন্তানেরা বেড়াতে আসতেন। গাউ জিয়াং হুইর এক ছেলে, এক মেয়ে। গত ২৩ অক্টোবর চীন থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার তার স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায় আসার কথা।
বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া বলেন, ঐ ভবনের দেওয়াল ও সীমানাপ্রাচীরের মাঝের ফাঁকা জায়গায় লাশটি পুঁতে রাখা ছিল। লাশের মুখে রক্তের দাগ ছিল। পরনে ছিল ট্রাউজার। বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির তিন নিরাপত্তা কর্মীকে থানায় নেওয়া হয়েছে। সিআইডির ক্রাইম সিন ঘটনাস্থল ও ফ্ল্যাট থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাউ জিয়াংকে দেখেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তার কর্মচারীরা।
বাসার ব্যবস্থাপক বাপ্পী সাংবাদিকদের বলেন, গাউ জিয়াং ঐ বাসায় এক বছর ধরে ভাড়া থাকতেন। মঙ্গলবার বিকালে জিয়াংয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, কয়েকদিন আগে চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন তিনি। গত এক বছরে ১৭-১৮ বার তিনি বাংলাদেশ-চীন যাতায়াত করেছেন। উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, লাশ পাওয়ার পর সিআইডি এবং চীনা দূতাবাসে খবর দেওয়া হয়। তারা এলে লাশ তোলা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গাউ জিয়াং যে ফ্ল্যাটে থাকতেন তার একটি অংশে তার অফিস ছিল। সেখানে একটি স্যান্ডেলে কয়েক ফোঁটা রক্ত এবং ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে। নিহতের নাকে রক্ত এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
বনানী থানার ওসি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।