জুমবাংলা ডেস্ক: মানবিক সহায়তা নিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
তিনি আজ (২৩ জুন) সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে দূরবর্তী বাদাঘাট হাই স্কুল মাঠ, আমবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিশ্বম্ভরপুর থানায় আশ্রয় নেওয়া বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
আইজিপি প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে স্পিড বোটে অবস্থান করে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
আইজিপি বিশ্বম্ভরপুর থানা ভবনে আশ্রয় নেয়া ৩২টি পরিবারের সদস্যদের দেখতে যান। তিনি তাদের সাথে কথা বলেন, তাদের প্রত্যেকের প্লেটে পুলিশের রান্না করা খাবার তুলে দেন। এ ৩২টি পরিবারকে প্রতিদিন পুলিশের রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। বন্যা শুরুর পর থেকেই বন্যা দুর্গত মানুষকে থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তাদেরকে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে।
পরে বিশ্বম্ভরপুর থানা প্রাঙ্গনে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আইজিপি বলেন, আকস্মিক বন্যায় অনেক মানুষ বাস্ত্তচ্যুত হয়েছে, তাদের পশু-পাখির ক্ষতি হয়েছে। তাদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কাজ করছেন।
আইজিপি বলেন, আশার কথা হচ্ছে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সবাই মিলে এ দুর্যোগ মোকাবেলা করবো।
তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অবিরাম কাজ করছে।
পরে আইজিপি সিলেটের সাহেবের বাজার হাই স্কুল এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ত্রাণ বিতরণ করেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (লজিস্টিকস) মোঃ তওফিক মাহবুব চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, এসএমপি কমিশনার নিশারুল আরিফ, সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিল্পব বিজয় তালুকদার, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, সিলেটের পুলিশ সুপার মোঃ ফরিদ উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আজ সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার সাহেবের বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ আশ্রয় কেন্দ্রে রান্না করা খাবার ও মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেন, পুলিশ তার নির্ধারিত দায়িত্বের পাশাপাশি বন্যার শুরু থেকেই বানভাসি মানুষকে উদ্ধার, থানাভবনে মানুষকে আশ্রয় দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানুষের পুনর্বাসনে কাজ করছে পুলিশ। বন্যাদুর্গত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ অবিরাম কাজ করছে।
ড. বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে আকস্মিক বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যায় কত মানুষ ঘরবাড়ি ফেলে এসেছেন- পুলিশ তাদের সেদিকে নজর রাখবে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনপ্রতিনিধি, গ্রামবাসী, প্রশাসন ও পুলিশ একসাথে কাজ করছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছু উন্নতি হচ্ছে। পাহাড়ে বৃষ্টিপাত না হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এর আগে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন ড. বেনজীর আহমেদ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইজিপি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট স্কুল মাঠে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন। সেখানে তিনি বানভাসিদের মাঝে পুলিশের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদান করেন।
পরে বন্যা কবলিত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করে বিশ্বম্ভপুর থানায় আশ্রয় নেয়া বন্যার্ত লোকদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেন।
এসময় সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ ও সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ পুলিশের পদস্থ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।