এমন নাটকীয়তা হয়তো বার্সেলোনা বলেই সম্ভব, এর আগেও কিংবদন্তি ফুটবলারদের ক্লাবটি থেকে বিদায়ের মুহূর্ত মোটেও সুখকর ছিল না। জাভি হার্নান্দেজ যার সর্বশেষ উদাহরণ। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সাবেক এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নিজ থেকেই ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে ইউটার্ন করায় ক্লাব। এরপর আবার বার্সা জাভিকে গতকাল কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করল। সবমিলিয়ে এমন নাটকীয় বিদায়ের পর এই কিংবদন্তি কী বলেন, সেটাই ছিল আগ্রহের বিষয়!
এ নিয়ে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন সাবেক এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার, ‘প্রিয় বন্ধুরা, রোববার থেকে বার্সেলোনার বেঞ্চে (ডাগআউটে) আমার পথচলার ইতি ঘটবে। যে ক্লাবটি আমার জীবন, সেখান থেকে চলে যাওয়াটা সহজ নয়, কিন্তু আড়াই বছর প্রধান কোচ হিসেবে এই ড্রেসিংরুমে থাকা, যেটা আমার দ্বিতীয় বাড়ি…এজন্য আমি খুবই গর্বিত।’
বার্সেলোনার অর্থনৈতিক অবস্থা যে বেশ নাজুক, সেটি এখন ওপেন সিক্রেট। তবুও গত ১৬ মে এ নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন জাভি। পরে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানায়, এতেই নাকি কোচের ওপর চটেছেন বার্সেলোনা বোর্ডের লোকেরা। ফলে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেই তারা জাভিকে বিদায় করে ছাড়ল। তবুও ক্লাব কর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি এই কাতালান কিংবদন্তি, ‘সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সমর্থক, খেলোয়াড়, স্টাফ, ক্লাবের কর্মরত সবাই, সভাপতি, বোর্ড পরিচালক, স্পোর্টিং ডিরেক্টর, সংবাদমাধ্যম এবং সবাই, যাদের সঙ্গে আমি আড়াই মৌসুম ধরে এই পথচলা ভাগাভাগি করেছি, সবাইকে ধন্যবাদ। আমার হৃদয়ের এই ক্লাবের জন্য শুভকামনা।’
অতুলনীয় সমর্থনের জন্য ক্লাবভক্তদেরও জানিয়েছেন ভালোবাসা,‘সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য আমি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাই, যারা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন, ফুটবলার হিসেবে এখানে কাটানো সময়ের মতোই একইরকম ভালোবাসা দিয়েছেন। রোববার থেকে স্ট্যান্ডে আমি আরেকজন বার্সেলোনা সমর্থক হয়ে যাব এবং সেটা এখন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হোক কিংবা কয়েক মাস পর কাম্প ন্যুয়ের স্ট্যান্ডে (আমি এভাবেই থাকব)। কেননা, খেলোয়াড় বা কোচ হওয়ার আগে আমি ছিলাম একজন বার্সেলোনা সমর্থক এবং জীবনে আমি এই ক্লাবটির কেবল সবচেয়ে ভালোটাই চাই।’
বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পাবেন জাভি
আগামীকাল (রোববার) সেভিয়ার বিপক্ষে চলতি মৌসুমের শেষ ম্যাচ খেলবে বার্সেলোনা। যা তাদের ডাগআউটে জাভিরও শেষ ম্যাচ। যদিও হুয়ান লাপোর্তার দলটির সঙ্গে সাবেক তারকার চুক্তি ছিল ২০২৫ সাল পর্যন্ত। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার বছরখানেক আগেই ছাঁটাই হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে বার্সাকে। আর এই ক্ষতিপূরণের অঙ্কটাও কম নয়—১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯০ কোটি টাকারও বেশি।
তবে ২০২১ সালের নভেম্বরে কোচ হয়ে আসা জাভিই পুরো অর্থ পাবেন না। অর্ধেক যাবে তার পকেটে, বাকিটা কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যরা পাবেন। স্প্যানিশ দৈনিক ‘লা ভ্যানগার্দিয়া’ জানিয়েছে, এই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দুই ভাগে বিভক্ত হবে। প্রধান কোচ হিসেবে জাভি পাবেন অর্ধেকটা। অর্থাৎ, ৭৫ লাখ ইউরো (৯৫ কোটি টাকার মতো)।
শুধু বড়লোকেরাই নয়, দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
এদিকে, দেশটির আরেক ক্রীড়া দৈনিক ‘এএস’ জানিয়েছে, লা লিগায় কোচদের ক্ষেত্রেও যেহেতু বেতনসীমা-সংক্রান্ত নীতি আছে, তাই পাওনা টাকা থেকে কিছুটা ছাড় দেবেন জাভি। ৭৫ লাখ ইউরোর পরিবর্তে তিনি ৭০ লাখ ইউরো (৮৯ কোটি টাকা) নেবেন। এতে করে নিজের লভ্যাংশ কিছুটা কম হলেও বার্সাকে আর্থিক সংগতি নীতি ভাঙার ঝামেলায় পড়তে হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।